Sunday 23 July 2017

Why are not the Intellectuals playing their role on the issue of KP Ramanunni & his death threat ?


Shimul Tikadar

Sri KP Ramanunni is a famous novelist & short story writer from kerala, India. He has got different types of awards & recognitions for his contributions towards Malayalam Literature.  He got kerala Sahitya Academy award for his first novel "Sofi Puaranja Katha". His ingenious personality & creations attracts all the common people of kerala. With-out doubt he is an estimable person to all the Indians.

Recently Mr. KP Ramanunni received a letter about 7 days ago at his residence. The letter allegedly warned Mr Ramanunni that his right arm & left leg would be chopped off if he do not  convert to Islam within six months. And the culprit behind the letter also warned that he would meet the same fate as that of Professor TJ Joseph whose right arm was cut off by the members of Muslim Community.

Now the questions of mine (Shimul Tikadar)  are that-
1. Where are those secularists who strongly had supported Poet Mr. Srijato Bandyopadhyay ?
2. Where are Mr. Kanaya Kumar, Mr. Omar Abdullah & their JNU who talk about the freedom of speech ?
3. Where are those intellectuals Who supported terrorists like Kashab & Menon ?

I just want to know that -
Why are not the Intellectuals using a single word for Mr. Ramanunni ? What's the problem ? is it seems a very simple issue ? Why do they not protest against the Muslim fundamentalists ?

Today , We all are searching Mrs Aparna Sen who was present at the meeting in Kolkata against Hinduttabad (recently). Now what does she think in this situation  (Ramanunni's death threat) ? Or What are we shout in for ?

Answer me -
Is secular sympathy only for a community ?
If the answer is "yes", then I hate the "Secularism".

Sunday 2 July 2017

মতুয়ারত্ন ড. বিরাট কুমার বৈরাগ্য এর সংক্ষিপ্ত জীবনী


মতুয়ারত্ন ড. বিরাট কুমার বৈরাগ্য 

লেখক - শিমুল টিকাদার

বিশিষ্ট খ্যাতিসম্পন্য লেখক ও গবেষক ড. বিরাট কুমার বৈরাগ্য বঙ্গীয় সমাজের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র । তিনি সকলের কাছে একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত । তার কর্মগুন , কর্মস্পৃহা , কাজের প্রতি উদ্যম,  অক্লান্ত পরিশ্রম এর জন্য তিনি ইতিমধ্যেই সমাজের যুবক সম্প্রদায়ের নিকট আদর্শে পরিনত হয়েছেন । অনুরূপ তিনি সামাজিক আন্দোলন এবং নেতৃত্ব গুনের জন্য সমাজের সর্বস্তরে হয়েছেন সমাদৃত।

ড. বিরাট বৈরাগ্য ২৫ শে জুন ১৯৫৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় মাঝদিয়া নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তার বাবা ধীরেন্দ্রনাথ বৈরাগ্য ছিলেন একজন মতুয়া গোসাই । ধীরেন্দ্রনাথ গোসাই ১৯৮১-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বারুনীর ৭ দিন ঠাকুরবাড়ির ( ঠাকুরনগর) মন্দিরে পূজারী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন । তিনি পি. আর. ঠাকুরের সমাজ আন্দোলনের অন্যতম একজন সহযোগী ছিলেন । ড. বৈরাগ্য ছোটবেলায় তার বাবার কাঁধে উঠে বিভিন্ন মতুয়া সম্মেলনে যোগ দিতেন । তিনি তখন থেকেই তার বাবাকে খুব জানার এবং অনুসরন করার চেষ্টা করতেন । এভাবেই মূলত মতুয়া ধর্ম দর্শন এবং সমাজ আন্দোলনের প্রতি তিনি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন ।

ড. বিরাট বৈরাগ্য এর ছাত্র জীবন ছিল বৈচিত্র্যময় । দারিদ্র সীমার নীচে থেকে পড়াশোনা করে কিভাবে জীবনে ঘুরে দাড়ানো যায় তিনি নিজে তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ । তিনি ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র । পড়াশোনার প্রতি ছিল তার গভীর মনঃসংযোগ । ড. বৈরাগ্য ছাত্র জীবন থেকেই ছিলেন একজন স্পষ্টভাষী এবং প্রতিবাদী ব্যাক্তিত্ব। তিনি শিক্ষকদের নিকট খুবই স্নেহধন্য ছিলেন । তিনি তার ভাই-বোনের পড়াশোনার  জন্য নির্লস ভাবে চেষ্টা করে গেছেন ; যার ফলশ্রুতিতে তার বোন অধ্যপিকা ড. পুষ্প বৈরাগ্য এর জন্য আজ তিনি গর্বিত । অধ্যাপিকা ড. পুষ্প বৈরাগ্য একজন অত্যান্ত সুনামধন্য গবেষক এবং সুবক্তা । তিনি তার দাদা ড. বিরাট বৈরাগ্য এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে সমাজ সেবার কাজে নিযুক্ত করেছেন । বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে রাজপথে তিনি  নেতৃত্ব স্তরের ভূমিকা পালন করেন ।

১৯৭৫ সালে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি একটি সরকারি হাসপাতালে হেলথ এসিট্যান্ট হিসেবে যোগদান করেন । ঠিক এর পর থেকে শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবনের নতুন অধ্যায়। বি. এ. ক্লাসের পড়াশোনা, চাকুরী, ভাই-বোনের প্রতি যত্ন , পারিবারিক দায়দায়িত্ব , দারিদ্রতা সবমিলিয়ে তিনি ঐ দিনগুলোতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন । এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি । তিনি ১৯৭৯ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম. এ. পড়ার সুযোগ পান এবং সেখানেও তিনি বিশেষ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন । অতঃপর তিনি দীর্ঘ ৯ বছর মতুয়া দর্শন এর উপর গবেষণা করে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ. ডি. ডিগ্রী লাভ করেন । ড. বিরাট বৈরাগ্য এর কর্ম জীবন ছিল অত্যান্ত বৈচিত্র্যময়  - তিনি ছাত্র থাকাকালীন অবস্থায় হেলথ এসিট্যান্ট হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন । তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে সেন্ট্রাল টেলিগ্রাফ বিভাগে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত গুরুত্বপূর্ন পদে চাকুরী করেছেন । এরপর তিনি হবিবপুর হাইস্কুল(উচ্চ মাধ্যমিক) এবং আরবাদি নেতাজী বিদ্যাপীঠ নামক পরপর দুটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন । স্কুল পরিচালনায় প্রশাসনিক স্তরে তার জ্ঞান, দক্ষতা এবং ব্যাবস্থাপনা ছিল চোখে পড়ার মতো । স্কুলের পরিকাঠামো, ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশ এবং অবিভাবকদের সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি যে নীতিমালা গ্রহন করেছিলেন তার জন্য তিনি সমাজের সর্বস্তরের সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন । অতঃপর প্রখ্যাত গবেষক ও লেখক ড. বিরাট বৈরাগ্য অত্যান্ত সুনামের সঙ্গে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ বছর অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মতুয়ারত্ন ড. বিরাট বৈরাগ্য কে বলা হয় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণ । বিগত কয়েক দশক ধরে তার হাত ধরেই মূলত মতুয়া ধর্ম দর্শন সারা ভারতবর্ষ সহ বহির্বিশ্বে বৃহৎ পরিসরে বিস্তার লাভ করেছে । ১৯৮৬ সালে পি. আর. ঠাকুরের নেতৃত্বে যে "মতুয়া মহাসংঘ" তৈরী হয় সেখানে ড. বৈরাগ্য ছাত্র যুব সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । এরপর এসিট্যান্ট জেনারেল এবং সর্বশেষ বর্তমানে তিনি অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্বরত আছেন । তিনি দরিদ্র নিন্ম-বর্নীয় মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তার জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যায় করেছেন । দরিদ্র দিনমজুর মানুষের দুঃখ-কষ্ট , যন্ত্রণা তিনি হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন । বঞ্চিত মানুষের আর্তনাদ সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে মতুয়া মহাসংঘের সহযোগিতা এবং ড. বিরাট বৈরাগ্য এর নেতৃত্বে ভারতবর্ষের বিভিন্ন যায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মতুয়া আন্দোলন। বিগত দিনের আসাম ভবনে ডেপুটেশন, নাগরিকত্ব আন্দোলনে অনশন , মেদিনীপুর এবং বারাসাত এর ডি. এম. অফিসে ডেপুটেশন সহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ন কর্মসূচি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ।

ড. বিরাট বৈরাগ্য পূর্ববঙ্গ থেকে ভারতবর্ষে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুদের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ । তিনি ভারতে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও নিজেকে উদ্বাস্তু সন্তান পরিচয় দিতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন । ২০০৫ সালে ভারতের নাগপুরে উদ্বাস্তু আন্দোলনের যে নব-জাগরন ঘটেছিল ড. বিরাট বৈরাগ্য সেখানে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছিলেন । এরপরে  দিল্লীর যন্তর মন্তর , ৫ই আগস্ট কোলকাতা ধর্মতলা  , কোলকাতা ওয়াই চ্যানেল সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তিনি উদ্বাস্তু আন্দোলনের নেতৃত্বস্তরের ভূমিকা পালন করেন । "বর্তমানে নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ" নামক একটি সংগঠনের সামাজিক আন্দোলনের সাথেও তিনি যুক্ত।

তিনি অপ্রতিরোধ্য । ড. বিরাট বৈরাগ্য সামাজিক আন্দোলন করতে গিয়ে শাসক গোষ্ঠীর অনেক বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন । ২০১৪ সালে ঠাকুরনগর উদ্বাস্তু আন্দোলন পক্ষে যে অনশন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল ড. বিরাট বৈরাগ্য ছিলেন তার অন্যতম প্রধান ভূমিকায় এবং পরবর্তীতে উদ্বাস্তুদের ৬ দফা দাবি নিয়ে যে রেল অবরোধ হয়েছিল তার নেতৃত্বদাতা হিসেবে সংগ্রামী জননায়ক ড. বিরাট বৈরাগ্য শাসক গোষ্ঠীর নিকট হতে প্রশাসনিক হেনস্থা এবং মামলা সহ জঘন্য চক্রান্তের স্বীকার হয়েছিলেন যা তাকে এখনও ভোগ করতে হচ্ছে ।  কিন্তু এত চক্রান্ত সত্বেও তাকে এক মুহূর্তের জন্যও দমিয়ে   রাখা সম্ভব হয়নি । শক্ত হাতে সমাজের হাল ধরে তিনি দরিদ্র-নিপীড়িত মানুষের বেদনাগাঁথা কষ্টের কথা সর্বস্তরে পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছেন । পরাজয় তাকে কখনও স্পর্শ করতে পারেনি।

মতুয়ারত্ন ড. বিরাট বৈরাগ্য পূর্ণব্রহ্ম শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ধর্ম দর্শন মানুষের সমাজ জীবনে প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন যাবত প্রচারের কাজ করছেন । শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা ও সমাজ নীতি সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন । তিনি কবি গানের প্রচার , প্রসার এবং সার্বিক উন্নতির জন্য প্রচুর অর্থ ,শ্রম এবং সময় ব্যায় করেছেন। সম্প্রতি বৈপুরা এবং বেথুর নামে দুটি গ্রামে মন্দির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে  ১২,০০০ ও ১০,০০০ টাকা দান করেছেন ।  তিনি বাংলাদেশের ওড়াকান্দি গুরুচাঁদ ঠাকুর এবং সত্যভামার মন্দির নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে ১ লক্ষ্য টাকা দান করেছেন । ৯ ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ সালে তিনি গুরুচাঁদ এসোসিয়েশন সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ডে ৬ লক্ষ টাকা দান করেছেন । ড. বিরাট বৈরাগ্য এই পর্যন্ত সর্বমোট ৩২ জন অনাথ শিশুর ভরন-পোষন এবং শিক্ষার দ্বায়িত্ব নিয়েছেন ; যারা সামাজে আজ প্রতিষ্ঠিত । এছাড়াও তিনি দরিদ্র দিনমজুর মানুষের নিকট বিপদে-আপদে ছুটে যান  ; তাদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র,  বাসস্থান, শিক্ষা,  চিকিৎসা নিশ্চিত করেন সম্পূর্ণ নিস্বার্থভাবে । তার এই মহৎ কাজের জন্য অনেকেই তাকে "দানবীর" নামে অবিহিত করে থাকেন।

মতুয়া দর্শন প্রচারের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ড. বিরাট বৈরাগ্য ১৯৭৯ সাল থেকে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন । আনন্দবাজার, যুগশঙ্খ, গণশক্তি সহ রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে । মতুয়ারত্ন ড. বিরাট বৈরাগ্য রচিত গবেষণাধর্মী  "মতুয়া সাহিত্য পরিক্রমা" বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে । মতুয়া দর্শন ভিত্তিক এই বইটিতে ফুটে উঠেছে দরিদ্র-নিপীড়িত মানুষের আত্মকথা এবং প্রাধান্য পেয়েছে গুরুচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা নীতি । তাছাড়া ভারতবর্ষের ব্রাম্মন্যবাদী চক্রান্তের যে নির্মম ইতিহাস তার একটি সম্যক প্রামাণ্য চিত্র এই গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে । এই মূল্যবান গ্রন্থটি বের হওয়ার পর সমাজের সর্বস্তরে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল , সমাদৃত হয়েছিল শিল্পী ও সাহিত্য মহলে । তাছাড়াও "মতুয়া সাহিত্য পরিক্রমা" নামক এই গ্রন্থটি ভারতের প্রতিটা রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন লাইব্রেরিতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে যা সাহিত্য ইতিহাসে বিরল।

মতুয়ারত্ন ড. বিরাট বৈরাগ্য তার কৃতিত্বের জন্য দেশ এবং বিদেশ থেকে একাধিক পুরস্কার ও সন্মানে ভূষিত হন । তিনি সর্বোচ্চ সম্মান ডি. লিট. ডিগ্রী লাভ করেন ২০০০ সালে । তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল বিরেন জে. শাহ্ তার হাতে ডি. লিট. এর সন্মাননা পত্র তুলে দিয়ে তাকে সম্বোর্ধিত করেন।
এছাড়াও তিনি  -
👉 "মতুয়া মিশন বাংলাদেশ" থেকে ২০০৮ সালে "মতুয়া রত্ন" উপাধি পেয়েছেন ।
👉 ২০১২ সালে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার কতৃক বিশেষ সম্বর্ধনা পেয়েছেন ।
👉 কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে "আম্বেদকর পুরষ্কার" প্রাপ্তি ।
👉 মিশর, দুবাই , বাংলাদেশ থেকে বিশেষ সন্মান ও সম্বর্ধনা পেয়েছন ।
👉তিনি এই পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে সর্বমোট ৮৬  টি মানপত্র অর্জন করেছেন।

সুখ্যাত মতুয়ারত্ন ড. বিরাট বৈরাগ্য একজন মানবতাবাদী সমাজ সেবক । তিনি একজন সুবক্তা ; তার প্রতিবাদী বজ্রকন্ঠে শোষকের চেতনা জাগ্রত হয় ।  মাটি এবং মানুষের সাথে তার রয়েছে আত্মিক সম্পর্ক । তার ব্যাক্তিত্বের চৌকষত্ব সবাইকে মুগ্ধ করে । তিনি একজন অত্যান্ত সুদর্শন এবং সুপুরুষ । ড. বৈরাগ্য এর বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর যখন আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হয় তখন সবাই তা মুগ্ধ হৃদয়ে শ্রবন করেন।

মতুয়ারত্ন ড. বিরাট বৈরাগ্য তার কৃতকর্মের জন্য সারাজীবন আমাদের নিকট চির-স্মরনীয় হয়ে থাকবেন।

প্রকৃতির টানে প্রকৃতির ডাকে - ১


শিমুল টিকাদার

নিজেকে আবিষ্কার করেছিলাম একটি রৌদ্রজ্জ্বল দ্বীপে । "মায়াদ্বীপ"। উপরে নীল আকাশ, কোন খুঁত নেই । সূর্যটা আকাশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে । পৃথিবীকে আলোকিত করেছে সে । মায়াদ্বীপের প্রতিটি কোনে এই আঁলোর প্রবেশ । আঁলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে দ্বীপের সৌন্দর্য ।

এই দ্বীপে আজ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আমার আপন প্রাণ । মায়াদ্বীপ তার সৌন্দর্য দিয়ে আবদ্ধ করেছে আমাকে । আমার প্রাণে মিলিয়েছে তার আপন প্রাণ । দ্বীপের চিকচিকে বালি , পাথর, শামুক, ঝিনুক, মুক্ত কিংবা নারিকেল গাছ এই সবকিছু যেন আমার দেহের এক একটি অঙ্গে পরিণত হয়েছে । এখন আমিই মায়াদ্বীপ ।

হ্যা, আমিই সেই মায়াদ্বীপ । নিজেকে উপলব্ধি করার মাঝে কখন যে সূর্যটা হেলে পড়েছে ঠিক ঠাহর হল না । দূর সমুদ্রের শেষ সীমানায় যেখানে আকাশ আর সমুদ্র গভীর মিতালি স্থাপন করেছে সূর্যটা রক্তবর্ণ রূপে ঠিক সেখানেই উপস্থিত হয়েছে । এখন সূর্যাস্ত । সুবিশাল সমুদ্র, অনন্ত আকাশ এবং উত্তপ্ত সূর্য ক্ষণিকের জন্য যেন নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করেছে; যার একমাত্র সাক্ষী আমি মায়াদ্বীপ ।

গোধূলি লগ্ন । এই সময় আমি বরাবরই বিচ্ছিন্নতায় ভুগি ।  অনেকটা না পাওয়া বেদনার এক অব্যক্ত অনূভুতি। কিসের যে অভাব তা হৃদয় দিয়ে অনুমান করা যায় না কিন্তু আমার হৃৎস্পন্দনে ধ্বনিত হয় সেই অভাব। হাহাকার। চারিদিক থেকে ছুটে আসে দমকা হাওয়া;  কিন্তু সে হাওয়া আমাকে স্পর্শ করে না ।চোখে,ঠোঁটে,মুখে ভেসে ওঠে উৎকন্ঠার অবয়ব। আমি ক্ষণিকের জন্য স্তব্ধ হয়ে রই ।

তবুও একটি চন্দ্রিমা রাতের অপেক্ষায় আমি এক জীবন্ত মায়াদ্বীপ । 

Saturday 1 July 2017

বনগাঁ-শিয়ালদহ ট্রেন ৩৩৮১৪ (লোকাল), ভোর ৪:৩৯ মিনিট ।

শিমুল টিকাদার

খুব ভোর বেলা । পৃথিবী তখন শান্ত । পাখিরও ঘুম ভাঙেনি । ল্যাম্প-পোস্টের আঁলোর নিচে কুকুরগুলিকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখা যায় । সারারাত জেগে ওরাও এখন ক্লান্ত । আঁধার আলোর সন্ধিক্ষণে আমি হেটে চলেছি স্টেশনের উদ্দেশ্যে । দেহে কোন গ্লানি নেই,  নেই কোন বিস্বাদ,  সুখটাও ঠিক ধরা দেয় না । অবচেতন মনে জনমানব-হীন একটি রাস্তায় আমি ছুটে চলেছি। মাঝে মধ্যে সাইকেলের বেলে আমার চেতন ফিরে আসে,  এক পলক তাকিয়ে আবারও দৃষ্টি ফেরে মাটির দিকে ।

ভোর ৪:২৮ মিনিট । ঠাকুরনগর স্টেশনের টিকেট কাউন্টারে পৌছালাম । দুজন বয়স্ক মানুষ পাখার নিচে ঘুমিয়ে আছে । ওরা পাগল । হ্যা! সভ্য সমাজের সাথে ওদের কোন সম্পর্ক নেই । ছেড়া কাঁথায় ঢাকা ওদের শরীর,  ওদিকে পা আর এদিকে মুখটা বাহিরে । ঘুমের এই চূড়ান্ত পর্যায়ে মশার কামড়ে ওদের হুশ ফেরে না । কতদিন যে ওরা চুল কাটে নি দাড়ি কামায় নি,  তার হিসেব কে বা রাখে ।  কিছু সময়ের জন্য আমি দাঁড়িয়ে ওদের মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে আবিষ্কার করেছিলাম এক অন্য জীবনের গল্প - যেখানে এই মানুষগুলোর জন্ম-মৃত্যুর কোন জ্বালা নেই, সুখ-দুঃখের কোন অনুভূতি নেই ; আছে ক্ষুদার তীব্র  যন্ত্রণা, আছে শুধু অবচেতন মনে একটি দিন একটি রাত পাড়ি দেয়ার সামান্য তৃষ্ণা।

৪:৩৭ মিনিট । আমি ২ নং প্লাটফর্মে দাড়িয়ে । ট্রেন এখানে পৌছাতে ঠিক ২ মিনিট বাকি । আকাশ মেঘলা নয়, আবার একদম নীলও নয় । স্টেশনের দু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছপালাগুলোর ভঙ্গিমা ঐ শুয়ে থাকা মানুষগুলোর মতোই মলিন । তেমন হাওয়া বইছে না কিন্তু  শীতল আবহাওয়া । শুনেছি এই সময় পৃথিবীতে কসমিক এনার্জি নেমে আসে , কিন্তু আমার তা ঠাহর হল না । মনে হল যেন ঘুম ঘুম চোখে মাথার মধ্যে হাত পা গুছিয়ে আমি শুয়ে আছি ।

ট্রেনের(লোকাল) শেষ কামরায় উঠে মাঝ বরাবর একটি সিটের চতুর্থ নং যাত্রী হলাম । এই সিটে যিনি বসেন তিনি মনে হয় পৃথিবীর বড়ো কোন এক অপরাধী । পাশের তিন জনের সঙ্গে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ করে এই চতুর্থ নং যাত্রীকে তার সিটে টিকে থাকতে হয় । তাও ভালো এই ভোরে অন্তত একটু ঘুমের ঝিমটি দিতে পারলেই শান্তি । কিন্তু মূহুর্তেই পরিবেশ বদলে গেলো, আমি হেলে থাকা মেরুদন্ড সোজা করে চারিদিকে তাকাতে লাগলাম । চারিদিকে কোলাহল আর ঘার্মাক্ত গন্ধ ।

ঝাপসা চোখ পরিষ্কার হয়ে গেল। আমার চারিদিকে মানুষ গিজগিজ করছে যাদের এক তৃতীয়াংশ মহিলা । ওদের পড়নে পুরানো ছেড়া শাড়ি । আর পুরুষদের পরনে ঢিলেঢালা ময়লা শার্ট । ওদের প্রায় প্রত্যেকের হাতে ফুলের ব্যাগ । এই ট্রেনে এলিট শ্রেণীর মানুষের যাতায়াত কম;  দরিদ্র দিনমজুর মানুষের সংখ্যাই বেশী । ওদের ময়লা, পুরানো এবং ঘর্মাক্ত  কাপড়ের গন্ধে ফুলের গন্ধ হার মেনে গেছে ।

ওরা শ্রমজীবী । কেউ কোলকাতায় ফুল বিক্রি করে কেউবা জন বিক্রি করে । এই মানুষগুলোর চেহারা গড়ন দেখলে বোঝা যায় ওরা নিন্ম-বর্নীয় মানুষ । শিক্ষার আলো এখনও ওদের ঘরে পরিপূর্ণতা পায়নি । কাল থেকে কালান্তরে গায়ে খেটে ওরা জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে । আজ যারা আমার সহযাত্রী তাদেরই মতুয়া দলে ডঙ্কা কাসর হাতে দেখা যায় । আমি তখন কল্পনায় দেখি ওদের ঘার্মাক্ত দেহ , ওদের ভ্র কুণ্চিত দৃষ্টি,  ওদের কপোলে ঝিরি-ঝিরি ঘাম যা কর্ন ছুঁয়ে শেষপর্যন্ত মাটি স্পর্শ করে । তবুও ওরা ক্লান্ত হয় না । এই দৃশ্য সবাইকে জানান দেয় শাসকের শোষণ নিপীড়ন ভেদ করে আমরাও আসছি ।

৬ টা স্টেশন অতিক্রম করেছি । ট্রেনে দিনের আঁলো প্রবেশ করেছে । সূর্যের আঁলো এবং চোখের আঁলোর দ্যুতি যেন গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছে । বিভিন্ন স্টেশন থেকে উঠে আসা এই কামরার যাত্রীদের একে অপরের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ আচরন দেখে আমি মুগ্ধ হই । ওরা যে কত দিনের কত কালের বন্ধু তার কোন হিসাব নেই । ওরা এই কামরার নিত্যদিনের যাত্রী । ওরা একই সুতায় গাঁথা একটি পরিবার । সাধারনত এলিট শ্রেণীর মানুষের মধ্যে এই ব্যাপারটা খুব কম দেখা যায় ।

আমার চোখে মুখে এখন আর ঘুমের কোন চিহ্ন নেই; কিছুক্ষণ আগের ঘামের দুর্গন্ধটাও আমার কাছে মিষ্টি গন্ধে পরিনত হয়েছে । এখন আমি ওদেরই একজন । ওদিকে তাকিয়ে দেখি একটি মেয়ে জানালার বাহিরে বৃষ্টি দেখছে । মাঝে মাঝে বাহিরে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে বিধায় ওর মা রেগে যাচ্ছে; কিন্তু সেদিকে মেয়েটির খেয়াল নেই । ওর নাম চুমকি, বয়স-৫ । মা কোলকাতা গৃহপরিচারিকার কাজ করে,  চুমকি অনেক ছোট তাই মায়ের সঙ্গেই থাকে । এই কামরার সকলেই ওকে বেশ আদরের চোখে দেখে । ----- ও পাশের একজন মধ্যে বয়স্ক মহিলা হেডফোনে গান শুনছে;  এই দেখে অন্য সকলে মিটমিট করে হাসছে । কে জানে  ? হেডফোনে গান শোনা হয়ত দরিদ্র শ্রেনী মানুষের অতিরিক্ত বিলাসিতা তাই এই হাসির কারন ।

একটু পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখতে পাই -- কিছু লোক মনোযোগ সহকারে তাস খেলছে । ওদের মুখে পাতার বিড়ি । এই কামরায় ওরাও একটা বিশেষ আকর্ষণ । ওদের মুখে থাকে বিভিন্ন রকমের  লোকগীতির সুর  , সেই সুরে পরিবেশ আরও মুখরিত হয়ে ওঠে । একটু হাসি, আড্ডা, গান সঙ্গে তাস আর পাতার বিড়ি ---- ২ ঘন্টার পথ অতিক্রম করতে আর কি চাই !!

মহিলাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের ব্যাগ থেকে ফুল বের করছে । কারও হাতে বেলী ,গন্ধরাজ, জবা,গাঁধা কিংবা কারও হাতে পদ্ম । ওদের মধ্যে মালতী নামের একজন  হাতে একটি পদ্মফুল নিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে । ব্যাপারটা এরকম - যার হাতে সবচেয়ে ভালো ফুল থাকবে সেই আজকের রাজা , ওদের মধ্যে প্রতিদিনই হয়তো এরকম প্রতিযোগীতা চলে ।

হঠাৎ পায়ে স্পর্শ পেয়ে আমার আনমনে উদাস ভাবটা কেটে গেল । আমি দেখলাম এক বৃদ্ধা মহিলা আমার পা ধরে বসে আছেন । উনি ভিক্ষুক নন। বয়স্ক মানুষ দেহের ভার বহন করতে পারেন না । বসার যায়গা না পেয়ে নিচেই বসে পড়েছেন । বৃদ্ধার মুখের অবয়ব দেখে খুব মায়া হল। উৎকন্ঠার প্রতিচ্ছবি । আমি ওনার দুহাত ধরে আমার সিটে বসিয়ে দিলাম । এই দৃশ্য দেখে অন্যরা আমার দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে । আমার খুব গর্ব হল, বুকে নেমে এলো প্রশান্তি । কিন্তু নিমিষেই আমার অপরাধবোধ হল - আমি কি এটুকু প্রশান্তির বিনিময়ে বৃদ্ধাকে সাহায্য করেছি । নিজেকে ধিক্কার । মনে হল - মানুষ আসলে নিস্বার্থভাবে কাউকে সাহায্য করতে পারে না ।

হৃদয়পুর স্টেশনে ট্রেনটা থেমে গেলো । এক বৃদ্ধ বাবা তার ১৯ বছর বয়সী এক পঙ্গু ছেলেকে নিয়ে অনেক কষ্টে ট্রেনে প্রবেশ করল । মুহূর্তেই পরিবেশ বদলে গেলো । আমার সহযাত্রীরা তাদের কোলাহল, আড্ডা, গান ছেড়ে সবাই ছেলেটির দিকে দৃষ্টিপাত করছে । কেউ একজন ওদেরকে বসার যায়গা ছেড়ে দিয়েছে । ছেলেটির নাম মৃত্যঞ্জয় । মৃত্যুকে জয় করেছে সে । সে কয়েক মাস আগেও এই কামরার যাত্রী ছিল , এখন মাসে একদিন ডাক্তারের নিকট যেতে হয় তার । পাটের মিলের শ্রমিক ছিল সে ; অসাবধানতা বসত মেশিনের মধ্যে হাত চলে যায় তার । মৃত্যুঞ্জয় এর বাবা গভীর উৎকন্ঠার সহিত তার ছেলের শারীরিক খোঁজ খবর সবাইকে  জানাচ্ছেন । এই অসহায় মৃত্যঞ্জয় এর প্রতি সবার যে কত আবেগ কত ভালোবাসা আমি দাঁড়িয়ে থেকে তা প্রত্যক্ষ করেছিলাম । হঠাৎ আমাকে ধাক্কা দিয়ে কে যেন ঐ ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে গেল । একটু খানি এগিয়ে দেখলাম জানালার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা চুমকি নামের সেই মেয়েটি সবাইকে অতিক্রম করে একটি লাল রঙের জঁবা মৃত্যুঞ্জয়ের সম্মুখে ধরে আছে । মৃত্যঞ্জয়ের হাত নেই । সে ঐ লাল জবার ন্যায় ছলাৎ ছলাৎ চোখে চুমকির দিকে তাকিয়ে আছে । ছোট্ট চুমকির ভালোবাসায় মৃত্যুঞ্জয় এর চোখ থেকে আজ সুখের কান্না ঝরছে.........!!

মনের মধ্যে জীবনের গভীরতম প্রদেশের সুখের দুঃখের গল্পগুলি একে সকাল ৬ : ৩২ মিনিটে শিয়ালদহ প্লাটফর্মে  নেমেছিলাম । আমি দাঁড়িয়ে আছি । পুরো ট্রেনটাকে আমি একবার দেখে নিলাম । আবারও ছুটে গেলাম সেই শেষ কামরার ধারে; জানালার বাহির থেকে তাকিয়ে দেখি ভেতরে কেউ নেই । শূন্য ।
 হৃদয়ের গহীনে ধ্বনিত হতে লাগল রবি ঠাকুরের সেই কবিতাটি  --

      কোথায় আঁলো কোথায় ওরে আঁলো
      বিরহানলে জ্বালো রে তারে জ্বালো
      রয়েছে দ্বীপ না আছে শিখা
      এই কি ভালো ছিল কি লিখা
      ইহার চেয়ে মরন সেযে ভালো
      বিরহানলে প্রদীপখানি জ্বালো ।।

বিজেপির ভোটের রাজনীতি আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবনা - শিমুল টিকাদার

লিখেছেন : শিমুল টিকাদার আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । আমাদের সম্প্রদায়ের বড়ো একটি অংশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষ...