Wednesday 29 March 2017

বিবাহ বিজ্ঞাপন


শিমুল টিকাদার

আমি আনন্দবাজার পত্রিকা একদম পড়ি না বললেই চলে । কেননা সাদা কে কালো আর কালো কে সাদা বানানো এই পত্রিকার নিত্য-নৈমিত্তিক কাজ । তবে রবিবার এর সংখ্যায় একটা অতিরিক্ত "রবিবাসরীয়" নামক সংখ্যা  থাকে এবং সেখানে ভালো কিছু লেখা থাকে বিধায় সপ্তাহের  এই একটা দিনই এই পত্রিকা সংগ্রহ করি । অন্যদিকে যুগশঙ্খ  পত্রিকার মান যথেষ্ট ভালো কিন্তু সেখানে আন্তর্জাতিক খবর, বিনোদন,  খেলাধুলা ইত্যাদি চর্চার তেমন সুযোগ নেই বলে আমার একঘেঁয়ে লাগে । এসব বিবেচনা করে দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়া পত্রিকা টা আমি বাড়িতে নিয়মিত রাখি ; এই পত্রিকাটি ঐসব ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট সক্ষম ।

এবার আসল কথায় আসি --
আগেই বলেছি ভালো কিছু লেখা পড়ার লোভে  রবিবার আনন্দবাজার পত্রিকা সংগ্রহ করি । এই সংখ্যার "রবিবাসরীয়" নামক অতিরিক্ত সংখ্যার পৃষ্ঠাগুলোতে খুব উচ্চ  মানের লেখা থাকে তা অস্বীকার করার কোন কারণ নেই । কিন্তু এই "রবিবাসরীয়" সংখ্যার বেশ কয়েকটা পৃষ্ঠা  জুড়ে থাকে বিবাহের বিজ্ঞাপন । আমি সেখানে প্রায়শই চোখ বুলিয়ে নেই । পত্রিকায় বিজ্ঞাপন থাকবেই তাতে কোন সমস্যার কারন নেই ।

কিন্তু আমি এই বিজ্ঞাপনগুলোর লেখা দেখে অবাক হয়ে যাই । ৯৯.৯৯ শতাংশ বিজ্ঞাপনেই দেখি পাত্র বা পাত্রীর  কাস্ট  আগে উঠে আসে । সে হয় ব্রাহ্মণ নয়তো  কায়স্ত । এবং বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয় ব্রাহ্মণ বা কায়স্ত ব্যতিরেকে অন্য কাস্ট হলে বৈবাহিক  সমন্ধ হবে না । আবার মুসলিমদের বৈবাহিক  বিজ্ঞাপনে শিয়া-সুন্নির ভাগও মাঝে মাঝে লক্ষ্য করা যায় । এই বিজ্ঞাপন পাতায় নমঃশূদ্র পাত্র-পাত্রীদের বিজ্ঞাপন খুবই কম থাকে ; হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র ।

এখন দেখুন  - বিজ্ঞাপনে এই ঝন্ডাবাহি ব্রাহ্মণ/কায়স্ত পাত্র'-পাত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ থাকে । কেউ ডাক্তার , কেউ  ইঞ্জিনিয়র , কেউবা সরকারের বড়ো কোন আমলা ইত্যাদি ইত্যাদি । এরা নিশ্চয়ই প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রীধারী  - কেউ পড়েছে বিজ্ঞান কেউবা দর্শন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিজ্ঞান কিংবা দর্শন কি তাদের  উচ্চবর্ণীয় জাতি পরিচয়ের অহমিকা শিখিয়েছে ? নিশ্চয়ই নয় ।
ভাবতে অবাক লাগে  - এরা দর্শনে এরিস্টাটল  , ডেল কর্নেগী চর্চা করে কিংবা বিজ্ঞানে ডারউইন এর বিবর্তনবাদ পড়ে পরীক্ষার খাতায় পাশ করে নিজেকে শিক্ষিত হিসেবে জাহির করছে ; আবার এদিকে বিবাহের ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনে এসে জাতের ঝাণ্ডা ধরছে  ।
ছিঃ !! এ যে শিক্ষিত সমাজের লজ্জা  !!

একটা শুদ্রের মেয়ে - ব্রাহ্মণের ছেলে কিংবা
একজন ব্রাহ্মণ পরিবারে মেয়ে - শুদ্রের ছেলে
কি পরস্পরের জীবনসঙ্গী হতে পারে না  ? পাত্র-পাত্রীর  পরস্পরের ইচ্ছা/চাহিদা থাকলে কেন তারা পারবে না । আজকের এই  বিজ্ঞানের যুগে এই অপ্রসাঙ্গিক বর্নীয় সমস্যা/কুসংস্কার/মনের ব্যামো প্রকট আকারে থেকেই গেছে । হাতে গোনা গুটিকয়েক ভিন্ন-মাত্রার উদাহরণ ছাড়া আসলে তেমন ভাবে অবস্থার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না ।

তবে সব ব্রাহ্মণ/কায়স্ত পরিবার এই ভুলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা আমি বলছি না । তাদের মধ্যে মডার্ন ফ্যামিলিও আছে যারা এই ভুল থেকে বেরিয়ে এসেছে ;  কিন্তু তাদের সংখ্যাটা খুব কম ।

বৈবাহিক সম্পর্ক আমার কাছে শুধুমাত্র সংস্কৃত ভাষায় কয়েক লাইন ভুলভাল উচ্চারণ  আর সামাজিক অনুষ্ঠান সাথে জাত-পাতের বিচার-বিশ্লেষণ নয় । বিবাহ মানে তো পারস্পরিক ভালোলাগার  নিরিখে সারাজীবন একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার। সেখেত্রে প্রিয় মানুষটি যে কোন বর্ণের , যেকোন গোত্রের , যেকোন ধর্মের হতে পারে ।
আর এটাই তো একুশ শতকের "মুক্তচিন্তা" । ভুল বললাম কি  ?

এছাড়াও প্রায়শই শোনা যায় কর্মক্ষেত্রে  - একই পোস্টে চাকুরী করার পরেও নিন্ম-বর্নীয় চাকুরিজীবীদের তাদের সহকর্মী উচ্চ বর্নীয়দের কাছে প্রভুত্বের শিকার হতে হয় ।  উত্তরপ্রদেশের অনেক মন্দিরে নিন্ম-বর্নীয়দের ঢোকার অনুমতি নেই  , স্বামী -স্ত্রী কে নগ্ন করে রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাড় করিয়ে রেখে মজা দেখা হয়  -- এসব ঘটনা  মিডিয়ায় প্রায়শই উঠে আসে ।

এই ঘটনাগুলো বহুকাল ধরে চলে আসছে আমাদের এই ভারতবর্ষে । রাষ্ট্র কে দ্বায়িত্ব নিয়েই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে । এজন্য  শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে । সমাজের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গুনীজন /বিদ্বজন'দের উঠে এসে কথা বলতে হবে । নয়তো নিন্ম-বর্গীয়দের প্রতি এহেন সামাজিক বঞ্চনা কোনদিন দূর হবে না । বরংচ তাদের অনন্ত কালের জন্য বয়ে বেড়াতে হবে মানসিক দাসত্ব ।

আজ আসি । বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর পরিবার কে পিরীলির ব্রাহ্মণ বলা হত কেন  এবং এত নাম যশ অর্থবৃত্ত থাকা সত্ত্বেও  তার পরিবারের সাথে উচ্চ-বর্গীয় সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবার কেন কোন বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করত না তখন - সেই ঐতিহাসিক গল্প নিয়ে অন্য একদিন হাজির হব । ভালো থাকবেন....!!

আমরা অসমীয় ভাইদের একটি সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় ; উদ্দেশ্য : সংকট দূরীকরণের মাধ্যমে বাঙালি-অসমীয় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রত্যায়


শিমুল টিকাদার

হৃদয় যাকে ছুঁয়ে যায় পরাজয় যাকে কাঁদায়  - তার নাম মানবতা ।
আর এই মানবতাকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে একটি মনুষ্য সমাজ  , রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের গনতন্ত্র । ভারতবর্ষ তার গনতন্ত্র রক্ষায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ।

কিন্তু দেশ ভাগের পর পাকিস্তান এমন  একটি অসভ্য-ইতর শ্রেনীর দেশে পরিণত হয় যার আজও নেই কোন মানবতা কেন্দ্রীক সমাজ, নেই কোন গনতন্ত্র । আজকের পাকিস্তান এর গর্ভ থেকে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের অগনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ঠিক পাকিস্তানের আদর্শেই গড়ে উঠেছে  ; যেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের কোন নিরাপত্তা নেই । এদেশের খুন,  গুম , হত্যা, ধর্ষণ,লুণ্ঠন,  নারী নির্যাতনের খবর  সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে তা নিশ্চয়ই সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে ।

দেশ ভাগের পর থেকে এই  এ অসহায় মানুষগুলো বেঁচে থাকার তাগিদে ভারতে চলে আসে । বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তে ভারতের অসম , ত্রিপুরা এবং পশ্চিম সীমান্তে পশ্চিমবঙ্গ হয় তাদের জীবনের শেষ ঠিকানা ।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখুন  -
দেশভাগের পূর্বে  এই অসহায় সাধারন মানুষগুলো সবাই কিন্তু একদিন ভারতীয় নাগরিক ছিল ; অথচ দেশ ভাগের সিদ্ধান্ত তাদের মতামত না নিয়েই নেয়া হয়েছিল । যে মূহুর্তে তারা জানতে পেরেছিল এই দেশ ধর্মীয় সমীকরণে   ভাগ হয়ে গেছে অর্থাৎ হিন্দু হওয়ার অপরাধে নিজের দেশে তারা আজ পরবাসী/পরাধীন সেই মূহুর্তে তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিল ।

জনবিনিময় হওয়ার কথা থাকলেও আদৌ পূর্ব বাংলার হিন্দুদের ক্ষেত্রে তা কার্যকর হয়নি । ফলে পাকিস্তানী/বাংলাদেশী  নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে উদ্বাস্তু পরিচয় নিয়েই তাদের ভারতের মাটিতে আশ্রয় নিতে হয় ।

কিন্তু ভারতে এসে এই উদ্বাস্তু মানুষের দুঃখ-কষ্টের আর সীমা ছিল না । এই অসহায় মানুষগুলোর প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের আচরন ছিল বিমাতৃসুলভ । তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার এই উদ্বাস্তু মানুষের পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করে তাদের জন্য খুলেছিল কয়েক হাজার ক্যাম্প । যেখানে খাদ্য, বস্ত্র , চিকিৎসার অভাবে তারা ধুঁকে ধুঁকে মরতে বসেছিল । এরপরেও কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষ্যান্ত হয়নি  - এই অসহায় মানুষগুলো'কে তারা পাঠায় বর্তমান ছত্তিশগড়  , আন্দামান সহ কয়েকটি প্রদেশে যেখানে তখন ছিল মানুষের বসতি-হীন অর্থাৎ অত্যান্ত দুর্গম অঞ্চল । শেষ পর্যন্ত রোগাক্রান্ত হয়ে  সেখানে হাজার হাজার উদ্বাস্তুদের মৃত্যু হয় । ঐসব অঞ্চল থেকে জীবনের  অর্ধেক খুইয়ে অনেকেই আবার  বেঁচে ফিরেছিল  পশ্চিমবঙ্গে ।

তখন পশ্চিমবঙ্গে সৃষ্টি হয়েছিল অন্য এক কলঙ্কিত ইতিহাস  -
এই উদ্বাস্তুদের মধ্যে কিছু মানুষ ক্যাম্প থেকে ছুটে গিয়েছিল সুন্দরবনস্থ মরিচঝাপিতে । সেখানে তারা ঘর বেঁধে বেঁচে থাকার নতুন সপ্ন দেখেছিল । জঙ্গলের কাঠ কেটে আর মাছ ধরে তারা জীবীকা নির্বাহ করতে শুরু করেছিল । কিন্তু বাঁধা হয়ে দাড়াল পশ্চিমবঙ্গ জ্যোতিবসুর রাজ্য  সরকার । যে সংগঠনগুলো  এই উদ্বাস্তু  মানুষগুলোর নিকটে সাহায্য পৌঁছে দিতে গিয়েছিল তাদের উপর কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল । সেখানের পানীয় কলগুলোকে  সিল করে দেয়া হয়েছিল । এখানেই শেষ নয়  - পুলিশ পাঠিয়ে চালানো হয়েছিল নারকীয় গনহত্যা । বিনা বিচারে মরন-বরন করে নিয়েছিল হাজার হাজার উদ্বাস্তু ।

অবশেষে উদ্বাস্তুদের স্বপ্নের  মরিচঝাপির ইতিহাস মরীচিকায় পরিনত হয়ে সেখানেই ভেঙে গিয়েছিল তাদের বেঁচে থাকার মেরুদন্ড । তখন তারা আবার দণ্ডকারণ্যে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিল ।

ঠিক এভাবেই অসম  , পশ্চিমবঙ্গ , ত্রিপুরা  সহ সারা ভারতবর্ষে পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুদের রক্তে রচিত হতে থাকে এক একটি কলঙ্কিত ইতিহাস । এবং আজও তা থেমে নেই ।

সেদিন যখন জানা গিয়েছিল অসমের একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে প্রায় ২০০ জন   পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তুদের বন্দি করে নির্যাতন  করা হচ্ছে যার মধ্যে প্রায় শতাধিক নারী-শিশু  ; তখন আর্তমানবতার ডাকে অর্থাৎ তাদের উদ্ধার করার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন ডাঃ সুবোধ বিশ্বাস এবং নিখিল.ভারত বাঙালি.উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতি সংগঠনের  অন্যান্য সদস্যবৃন্দ । কিন্তু কিছু দুষ্কৃতীকারী অর্থাৎ তৃতীয় কোন শক্তি ডাঃ সুবোধ বিশ্বাস নেতৃত্বাধীন এই সংগঠন  এবং অসমীয় আসু সংগঠন ও প্রশাসনের মধ্যে একটি পরিকল্পিত  দাঙ্গা লাগিয়ে দেয় । যার ফলে বাঙালি-অসমীয়দের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দের সৃষ্টি হয় । ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস মহাশয়ের উপর জারি করা হয় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ।

এই ঘটনায় আমাদের পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটা মানবতাবাদী প্রাণ গভীরভাবে চিন্তিত । ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস এবং নিখিল.ভারতের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অসম সরকার বিনা-বিচারে বিনা-তদন্তে যে প্রশাসনিক হেনস্থার বাতা-বরন তৈরী করেছেন তার জন্য আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন । আমরা অসমের শিক্ষিত সুশীল সমাজের কাছে ইতিমধ্যে বেশ  কয়েকবার শান্তিপূর্ন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার জন্য আহবান জানিয়েছিলাম - কিন্তু এখনও সাড়া না পেয়ে আমরা খুব  মর্মাহত ।
কিন্তু আমরা এখনও আশাহত হইনি । আমরা অসমীয় ভাইদের  একটি সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় অধীর-আগ্রহে অপেক্ষা করছি ।

কোন একটি ঘটনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমান , যুক্তি  , বিচার-বিশ্লেষণ ইত্যাদি পরিস্ফুটনের মাধ্যমে আমরা যখন কোনো ইতিবাচক  সিদ্ধান্তে আসি এবং কার্যক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করি  -- তার নাম বিবেক ।  অর্থাৎ বিবেক হল একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত ।

আমরা বাঙালিরা অসমীয় ভাইদের আবারও একবার আহবান জানাই  -
বর্তমানে অসমীয়-বাঙালিদের মধ্যে যে সংকট চলছে আসুন আমরা উভয় পক্ষ  মিলে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তের দিকে ধাবিত হয়ে বিবেকের পরিচয় দেই।

আমরা হিংসা চাই না আমরা শান্তি চাই । আমরা বাঙালিরা অসমীয় ভাইদের প্রানে প্রাণ মেলাতে চাই । আমরা নিরপরাধ ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস মহাশয়ের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহার সহ নিখিল.ভারতবাঙালি.উদ্বাস্তু সংগঠনের সকল সদস্যবৃন্দের বিরুদ্ধে রুজু  করা মামলা থেকে অব্যাহতি চাই । আমরা চাই অসমীয়-বাঙালিদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল সৃষ্টি করতে গত ০৬/০৩/২১০৭ ইং তারিখে যে তৃতীয় শক্তির উত্থান হয়েছিল তাদের মুখোশ উন্মোচিত হোক ।

 অসম সরকারের কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন এই যে - গত ০৬/০৩/২০১৭ ইং তারিখে অসমীয়-বাঙালিদের মধ্যে যে অসহিষ্ণুর  বাতা-বরন তৈরী হয়েছিল তার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ "তদন্ত কমিশন গঠনে" এগিয়ে আসুন ।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ভারতের জন-গন-মন , বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর বন্দেমাতরম, মাস্টারদা সূর্য সেনের দেশপ্রেম  আমাদের যেভাবে জাতীয়তাবাদী হতে উদ্বুদ্ধ করেছে কিংবা ভূপেন হাজারিকা'জীর  "মানুষ মানুষের জন্য " গানটি আমাদের যেভাবে মানবপ্রেম শিখিয়েছে  ঠিক সেভাবেই আসুন আমরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতির পরিচয় দেই ।
আমরা ভারতীয় । এই মূহুর্তে অসমে-বাঙালিদের ভারতীয় সত্ত্বার কথা মাথায় রেখে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে একটি গর্বিত জাতি হিসেবে নিজেদের সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে  বিশ্ব-দরবারে পরিচিত হওয়া একান্ত কাম্য ।

আমরা বাঙালিরা ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রত্যায়ে অসমীয় ভাইদের হাতছানি দিয়ে ডাকছি  ; আপনার সাড়া দিন ।

আমাদের ডাকে আপনাদের একটি সবুজ সঙ্কেত'ই আগামী দিনের সুখী-সমৃদ্ধ ভারতবর্ষ তৈরী করতে পারে ।

Sunday 12 March 2017

আসু ছাত্র সংগঠন এবং অসম সরকারের প্রতি ঐক্যের উদ্বাত্ত্ব আহবান এবং একটি মানবিক আবেদন


     মানুষ মানুষের জন্যে জীবন জীবনের জন্যে
      একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না

প্রখ্যাত অসমীয় সঙ্গীত-শিল্পী ভূপেন হাজারিকা'জীর বাংলায় গাওয়া এই গানটি কোটি বাঙালি হৃদয় কে আজও অনুপ্রাণিত করে । মানুষের দুঃখ-কষ্ট , সামাজিক বঞ্চনা , ক্ষুধার্ত ভিটে-মাটিহীন উদ্বাস্তু মানুষের পাশে সমাজের মানবতাবাদী-সংগ্রামী মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে,  তাদের পক্ষে কথা বলতে হবে -- ভূপেন'জীর  এই গানটি মূলত তারই বার্তা বহন করে ।

ভিন্ন ধর্ম , ভিন্ন সংস্কৃতি , ভিন্ন জাতি অর্থাৎ দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ভারত ভাগ হয়ে ১৯৪৭ সালে যে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল  - তা কেবলই মাত্র একটি কলঙ্কিত ইতিহাস । দেশ ভাগের পর পাকিস্তানে তৈরী হয় "শত্রু সম্পত্তি আইন" যা বর্তমানে বাংলাদেশে "অর্পিত সম্পত্তি আইন" নামে পরিচিত । এই আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বসতবাড়ি এবং চাষের জমি কেড়ে নেয়া হয় । আর হত্যা,  লুণ্ঠন , ধর্ষণ,  ধর্মীয় নিপীড়ন কারও অজানা নয় । পূর্ববঙ্গের তথা বাংলাদেশের এই নিপীড়িত মানুষগুলোই বেঁচে থাকার তাগিদে চলে আসে ভারতে । কিন্তু ভারতে এসে কি তাদের মুক্তি মেলে ? কখনই নয় । প্রতিনিয়ত পুলিশি নির্যাতিত , বসত ভিটে-মাটিহীন দুঃস্থ জীবন , নাগরিক পরিচয় পত্রের অভাব যার জন্য  বিনামূল্যে চিকিৎসা - রেশন মেলে না ইত্যাদি ইত্যাদি কারনে এই বাঙালি উদ্বাস্তুদের জীবনে আজ চরম বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে । সেদিন যেদিন বৈঠকে যারা এই মানুষগুলোর কথা না ভেবেই ভারত-পাকিস্তান কে ভাগ করে আলাদা আলাদা  স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করতে মরিয়া হয়ে  চুক্তি সই করছিল তারা আজ এই কোটি কোটি উদ্বাস্তু হৃদয়ে এক একজন পরিচিত  কলঙ্কিত ফিগার ।

আক্ষরিক অর্থে বিবেচনা করলে দেখা যায়  - পূর্ব বাংলার হিন্দুদের রক্তের উপর দাড়িয়ে আছে আজকের স্বাধীন সার্বভৌম ভারত ।

ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস এমন একজন "নিবেদিত প্রাণ" যিনি এই দুঃস্থ-অসহায় ভিটে-মাটিহীন মানুষদের অধিকার আদায়ের পক্ষে কথা বলেন , তাদের  হয়ে লড়াই করেন । আমরা ইতিমধ্যে সকলেই জানি যে,  গত ০৬/০৩/২০১৭ ইং তারিখে অসমের ধমাজী জেলায় ডাঃ সুবোধ বিশ্বাস মহাশয়ের  নেতৃত্বে ৫০-৬০ হাজার উদ্বাস্তুদের নিয়ে একটি "অধিকার আদায়" ভিত্তিক জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । এবং বিশাল ৫-৬ কিলোমিটার রাস্তা বিস্তৃত একটি বিশাল মুক্তি মিছিলের আয়োজন করা হয় । কিন্তু পেছন থেকে কিছু দুষ্কৃতীকারী মিছিলের ওপর নিজেদের আসু ছাত্র সংগঠনের কর্মী  পরিচয় দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় । কিছু সময় পর আতঙ্ক ছড়িয়ে অবস্থা আরও বেগতিক হয়ে ওঠে । তখন মিছিলের কর্মীদের তুলে নিয়ে আসুর অফিসে মারধর করা হয় । এরপর দু’পক্ষই হামলা-পাল্টা হামলায় লিপ্ত হয় ।

ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস মহাশয় এই সুদীর্ঘ  মিছিলের সামনে থাকায় এই ঘটনাগুলো তিনি ১০ মিনিট পরে জানতে পারেন । কিন্তু যেহেতু তিনি ঐ মিছিলের নেতৃত্বদাতা এবং NIBBUSS  এর চালক সেহেতু তাকেই এই দুর্ঘটনার দ্বায় বহন করতে হয় । অসম প্রশাসন তার বিরুদ্ধে এরেস্ট ওয়ারেন্ট বের করেন এবং আসু কর্মীরা তাকে ওয়ান্টেড ঘোষনা করে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারিং করেন । এছাড়াও তারা সুবোধ বিশ্বাস কে অসম সরকার  এবং আসু সংগঠন বিরোধী হিসেবে ঘোষণা করেন । ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস এর বিরুদ্ধে যে অসহিষ্ণু বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল তা পরে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে ।

কিন্তু সুবোধ বিশ্বাস  মহাশয় দীর্ঘদিনের দরিদ্র উদ্বাস্তুদের নিয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে যে কর্মসূচিগুলো  পালন করেছেন তা পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়  - তার আন্দোলন শুধুমাত্র ভিটে-মাটিহীন উদ্বাস্তু মানুষের পক্ষে যা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং অন্য কোন সংগঠন বিরোধী নয় তো বটেই । আমরা মনে করি এই সম্পূর্ণ ঘটনা বাঙালিদের সাথে ➡ অসম সরকার এবং আসু সংগঠনের ভুল-বোঝাবোঝির কারনে সৃষ্টি হয়েছে ।

এমতাবস্থায় আমরা বাঙালিরা অনতিবিলম্বে ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস বাবুর এরেস্ট ওয়ারেন্ট প্রত্যাহারের দাবি জানাই এবং আসু ছাত্র সংগঠন কে সৌহার্দ্য এর বার্তা দিয়ে বলতে চাই যে আপনারা ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আমাদের সাথে কথা বলুন । এবং আপনারা সেই তৃতীয় শক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন যারা বাঙালি.উদ্বাস্তুদের মিছিলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাঙালি-অসমীয়দের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরাতে উদ্যত হয়েছিল  ।

আমরা অসমীয় সুশীল/শিক্ষিত/বুদ্ধিজীবী সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি  - অসমে অবস্থিত আমাদের মানবতাবাদী-সংগ্রামী নেতা ডাক্তার সুবোধ বিশ্বাস মহাশয়ের প্রান আজ বিপন্ন প্রায় । তাই আপনারা সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে এগিয়ে আসুন , আমাদের সাথে আপনারা কথা বলুন। অসহায় সুবোধ বিশ্বাস  মহাশয় এর পাশে দাড়ান ।
আপনাদের কাছে এটি আমাদের মানবিক আবেদন ।

ভূপেন'জীর ঐ গানটির একটি লাইন  -
পুরানো ইতিহাস ফিরে এলে লজ্জা কি তুমি পাবে না
ও বন্ধু মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্যে

এই গানের ন্যায় আসুন  আমরা উভয়েই যেন এমন কোনো ইতিহাস রচনা না করি যাতে আমাদের ভবিষ্যতে লজ্জা পেতে হয় ।

আমরা অসমীয় সঙ্গীত-শিল্পী  ভূপেন হাজারিকা'কে ভালোবাসি , অসমীয় মানুষদের ভালোবাসি । আমরা আসু ছাত্র সংগঠন এবং অসম সরকারের জাতীয়তাবাদ ও সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করি ।আমরা এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতে বিশ্বাস করি । অসমের মানুষ আমাদেরই ভাই । আমরা মনে করি অসমীয় এবং বাঙালিদের মধ্যে যে সাময়িক  সংকট চলছে অতি শীঘ্রই তার উত্তরন ঘটিয়ে একে অপরের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে সমগ্র ভারতে দৃষ্টান্ত স্থাপনে সচেষ্ট হব ।

               আমরা অসমীয় ভাইদের সবুজ
                সঙ্কেতের অপেক্ষায় রইলাম  !!


Tuesday 7 March 2017

অনুকূল ঠাকুরের ব্রহ্মতেজ


পর্ব - ২

সুদর্শন

এবারে দেখাযাক হনুকূল নারীদের কী চোখে দেখতো :

✘ মেয়েদের বৈশিষ্ট্যে আছে -
নিষ্ঠা, ধর্ম, শুশ্রূষা, সেবা, সাহায্য ও প্রজনন (যান্ত্রিক কিন্তু বলা হয় নি) ;
তুমি তোমাদের ঐ বৈশিষ্ট্যের কোনো-কিছুকেই ত্যাগ করিও না ;
ইহা হারাইলে তোমাদের আর কী রইল ?
   (নারীর নীতি, পৃ ৪)

✔ তখনো বোধহয় 'স্বাধীন' ও 'মুক্তমনা' শব্দদ্বয় সৃষ্টি হয়নি ।

✘ যুবতী কন্যার -
যৌবন শেষ ও প্রৌঢ়ত্বের আরম্ভ এমনতর বয়সের বর হওয়াই শ্রেয়ঃ, ....
তাই, শাস্ত্রে আছে -
এরূপ বিবাহ ধর্ম্ম্য অর্থাৎ জীবন ও #বৃদ্ধিপ্রদ।
     (নারীর নীতি, পৃ ৭৬)
✘স্বামী-স্ত্রীর ভিতর অন্ততঃ ১৫-২০ বৎসর বয়সের পার্থক্য থাকা উচিৎ। (না.নী., পৃ ৯২)

✘তুমি যদি তোমার স্বামীকে প্রকৃতই ভালোবাসিয়া থাক তবে তাহার অধীনতাই তোমার মুক্তি ও তৃপ্তি । (না.নী.,পৃ ৯৫)

✔ বিদ্যাসাগরের নাম এনার কোথাও পাবেন না ।

✘ তোমার কোনো ব্যবহারে স্বামী যদি বিরক্ত/দুঃখিত /ক্রুদ্ধ হইয়া ওঠেন তবে ত্রুটি স্বীকার করিয়া দুঃখিত হও।
(না.নী, পৃ ১০২)
✘ শিষ্যা : মেয়ে মানুষ 'বোকা জাত', তাদেরই কি যত দোষ?

ঠাকুর : (কোনো প্রতিবাদ না করে)তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি যে কথাটা বলতে চেয়েছিলাম,সেটি ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ হয়েছি (স্ত্রীর কথা বলার বা প্রতিবাদ করার জন্যই সংসার্্ব অশান্তি হয়) ।  ত্র“টি আমারই । এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখবি, স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। একটা জায়গায় কেবল স্বামীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারিস, অর্থাৎ যদি দেখিস, স্বামী তাঁর মা-বাবা বা গুরুজনের সঙ্গে অসমীচিন ব্যবহার করছে, সেখানে কখনও কিন্তু স্বামীর পক্ষ সমর্থন করতে যাবি না, শ্বশুর-শাশুড়ীর পক্ষ হয়ে সেখানে ন্যায্য প্রতিবাদ করবি। স্বামীর মঙ্গলের জন্যই এটা করা দরকার। [তথ্যসূত্র: আলোচনা প্রসঙ্গে, ৬ই কার্তিক, শুক্রবার, ১৩৪৯ (ইং ২৩/১০/১৯৪২)]

✔ পরকীয়া বিষয়ক এতটা উদারনৈতিকতা কোথাও দেখিনি । স্বামী মাতলামি, চুরি, রাহাজানি করলেও তার প্রতিবাদ করা যাবে না । জাস্ট 'একটু' বুঝিয়ে বলতে হবে ।

✘ আদর্শপরায়ণ পুরুষই বহুবিবাহের উপযুক্ত । (না.নী, পৃ ১৪৪)

✔ভাইস-ভারসা কোথাও পাবেন না ।

 ✘আজুদিয়া সীতানাথবাবুর বাড়ীতে একদিন এক গৃহমধ্যে শ্রীশ্রীঠাকুর আমাকে বলিলেন- “আপনাকে নির্জ্জনে পেলে একটা কথা বলবো মনে করি, কিন্তু আপনাকে নির্জ্জনে একাকী পাই না। দেখুন, অনেক সময় ভালবেসে আপনাদিগকে চেপে ধরি, কখন বা কাহাকেও কামড়াইয়া দিই। এমন সময় মন এমন স্তরে থাকে যে, স্ত্রী-পুরুষ ভেদাভেদ জ্ঞান থাকে না। একদিন মার (শ্রীশ্রীজননীর) মাথায় (?) কামড়াইয়া দিয়েছিলাম। যখন স্ত্রীলোক আমার কাছে আসে বা স্ত্রীলোকের নিকটে আমাকে যেতে হয় তখন আমাকে সামলে রাখবার জন্য যদি কোন পুরুষলোক উপস্থিত না থাকে, আর আপনি যদি থাকেন তাহলে স্ত্রীলোক দেখে সরে যাবেন না। আমার কাছে থাকবেন (আমাকে বেঁধে রাখবেন) ।প্রতিজ্ঞা করুন।” আমি তাহার কথায় স্বীকৃত হইলাম। আবার বলিলেন- “দেখুন সতীশ গোসঁই-এরও ঐরূপ হয়, তাই সে স্ত্রীলোক দেখে অনেক সময় সঙ্কুচিত হয় না।... তার কিন্তু মাতৃভাব এবং অনেক সময় স্ত্রী-পরুষ জ্ঞান থাকে না।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ২৪০)

 তবে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিখ্যাত অন্যকারনে। এই ডাইনামিক হিন্দুধর্মে #ইউজেনিক্স নামে ডিনামাইট ঢোকানোর পেটেন্টটি উনার । যারা ইউজেনিক্স নিয়ে পরিচিত নন -তাদের জন্য দুই লাইন জানিয়ে রাখি। এটি একটি খরতরনাক অপবিজ্ঞান যা নিয়ে হিটলার অবসেসড ছিলেন বিশুদ্ধ জার্মান জাতির সৃষ্টিতে। বিবাহে নরনারীর নির্বাচনের বিশুদ্ধতা উৎকৃষ্টতর সন্তানের জন্ম দেয়-এই হচ্ছে উনাদের “বিজ্ঞান সম্মত ” বিশ্বাস !! অনুকুল চক্রবর্ত্তীর অবশ্য হিটলারে ঠাঙারে বাহিনী ছিল না। তাই হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদকে আশ্রয় এবং সাশ্রয় করেই উনি, হিন্দু ধর্মে ইউজেনিক্স ঢোকাতে উৎসাহী হোন। উনার দর্শনের মূল থিওরী এই রকম – হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদ ভাল! কারন তা বংশ গৌরব এবং বংশ দক্ষতা ( স্কিল) রক্ষা করে! রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করে! এই ঠাকুর কোন এক কালে ডাক্তারী পাশ করেছিলেন। কোন বায়োলজি গ্রন্থে শুদ্র রক্তের সাথ ব্রাহ্মন রক্তের পার্থক্যর পরীক্ষালদ্ধ ফল পাওয়া যায়, তা আমাদের কারুর জানা নেই । তবে উনিত আবার ঈশ্বরের সাথে কথা বলতেন-হয়ত কানে কানে ইশ্বর এসে এসব বৈজ্ঞানিক অমৃতবানী উনার কানে ঢেলেছিল! তবে এই বর্ণবাদ টেকাতে এবং উৎকৃষ্ট হিন্দু সন্তান প্রসব করিতে, উনার বিবাহের ফর্মুলা হচ্ছে এই রকম – প্রতিটা হিন্দু পুরুষের দুইটি বিবাহ করা উচিত ! (সৎসঙ্ থেকে যে পত্রিকা বের হয় সেখানে 'পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন' সাঁটানো থাকে যেখানে এর প্রমাণ পাবেন এবং গরীবের ঠাকুরের মাসিকে একটি বিজ্ঞাপন ছাপাতে কত 'মুক্তহস্তে দান' দিতে হয় সেটা শুনলে আপনাদের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাবে । মনের মতো (ফুটো)পাত্র পাবার জন্য না-হয় একটা বিজ্ঞাপন দিয়েই কথাটা যাচাই করে নিলেন ! ) প্রথমটা সবর্ণ, পরেরটা অনুলোম অসবর্ণ । অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ মানে উচ্চকাস্টের হিন্দু পুরুষের সাথে নিম্ন বর্ণের মহিলার বিবাহ। ব্রাহ্মন পুরুষের সাথে শুদ্রকন্যার বিবাহ। উচ্চবর্নের মহিলার সাথে নিম্ন বর্নের পুরুষের বিবাহে তিনি নারাজ। কারন তার বায়োলজি “গবেষণা” । নিম্নবর্নের স্পার্ম নাকি উচ্চবর্নের ডিম্বানুকে নষ্ট করে। প্রথমত উচ্চবর্নের আর নিম্ন বর্নের লোকেদের স্পার্ম আলাদা হয়-এই অতি মুল্যবান বৈজ্ঞানিক তথ্যর জন্য, উনাকে নোবেল বা নিদেন পক্ষে একটি গোবেল প্রাইজ দেওয়া উচিত ছিল! সর্বর্নে বিবাহটা করার পর কিন্ত আপনি অসবর্ণ বিবাহটা করিবেন! কেন? কারন আপনার সবর্ন স্ত্রীর গর্ভে আসিবে বিশুদ্ধ সন্তান! আর অসবর্ন বিবাহে আসিবে অশুদ্ধ সন্তান! অশুদ্ধ সন্তান কেন? এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিজ্ঞানে একেবারে “নিরক্ষর ” ছিলেন না । উনার মতে বায়োডাইভারসিটি বাড়াইতে দ্বিতীয় বিবাহটি অসবর্ণ করিতে হইবে! মোদ্দা কথা উনার এই স্বরচিত ” বৈজ্ঞানিক ” ইউজেনিক্স ভারতে খুব বেশী চলে নি-কারণ নেহেরু হিন্দুদের বহুবিবাহ আইন করে রদ করেন । তবে শ্রীঠাকুর, থিওরী অনুয়ায়ী দুটি বিয়ে করেছিলেন। এতে সমাজে বিশুদ্ধ এবং ডাইভার্স সন্তান এসেছিল কিনা আমার জানা নেই – তবে সতীন ও সতীনপুত্রের ঝগড়ায়, তার সৎসঙ্গ আশ্রম উঠে যাবার উপায় হয় একসময়। শিষ্যরাও বিরক্ত হয়েছিল। আমার দাদু তার সন্তানদের ওপর খাপ্পা ছিলেন-এটুকু মনে আছে। (৩) কেও যদি জোকার নায়েকের বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে পুলকিত হৌন-তাহলে অনুকুল চক্রবর্ত্তীর বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উদ্ভাবনী শক্তিতে তূরীয় অবস্থা পেতে পারেন! উনার পুনঃজন্মের তত্ত্বটি এখানে হুবহু দিলাম – ।। পুণর্জন্ম কিভাবে হয় ।। “সম্বেগ জীবের বা মানুষের মধ্যে gene-এর (জনির) ভিতর-দিয়ে যে pitch-এ (স্তরে) ওঠে, মরে যাওয়ার সময় psycho-plasm-এ (মানস দেহে) engraved (মুদ্রিত) হ’য়ে থাকে সেই pitch-এ wave-এর (তরঙ্গের) আকারে । মিলনেচ্ছু sperm-এর (শুক্রকীটের) ভিতর সেই জাতীয় সম্বেগ সৃষ্টি হ’লে tunining (সঙ্গতি) হয় এবং মৃত ব্যক্তি পুনরায় শরীর গ্রহণ করার সুযোগ পায় । জন্ম ও মৃত্যুর এটাই revolving process (ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি) ।”

✔উপরোক্ত ঘটনাগুলো কি প্রমাণ করে না যে অনুকূল একজন মানসিক ও যৌন রোগী? যে ব্যক্তি নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তার ভক্তরা কীভাবে বিশ্বাস করবে তাকে ?

আরও অজস্র-গুণান্বিত ঠাকুরের কেচ্ছা শেষ করবো এই সত্য ঘটনাটি দিয়ে, ----

"ব্রহ্মতেজ"
******
ঠাকুর মহাকালের ন্যায় লিঙ্গ সামলাতে না-পেরে একদিন নিজের শালীর সাথে চুপিচুপি অশালীনতায় লিপ্ত হয় । কিছুদিন পর শালী ফলবতী হলে লোককানাকানিতে একটা ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে যায় । এমন চললে ভবিষ্যতে চ্যালারা রেগে অন্ডে তৈলমর্দনের বদলে বিঁচুটি পাতা ঢলে দিতে পারে এই ভয়ে বন্দে-আদর্শপরায়ণ লোকলজ্জায় ধ্যানবন্দী  হয়ে সমাধা খুঁজতে লাগলেন । এমতাবস্থায় তার যোগ্য স্ত্রী ভক্তদের বোঝাতে লাগলেন, "ওরে তোরা আর পাপাচার করিসনে । পতিতের কি সাধ্যি ঠাকুরের লীলা বোঝে !  ওটা ঠাকুরের 'ব্রহ্মতেজ" ।

ওনার সর্বাধিক বিখ্যাত শিষ্য-লেখক শীর্ষেন্দু । বিখ্যাত করার পিছনে 'মিডিয়া ঠাকুরে'র অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নাকি একবার মরতে গেছিলেন । সেখান থেকে হনুকূল তাকে নতুন জীবনের দিশা দেয় । দিশার সাথে বাঁশ ফ্রি । নইলে যে কলম থেকে 'ঘুণপোকা' বেরোয় সেই কলমে কীভাবে ঘুণ ধরে যায় ! বাংলা সাহিত্য যাদের কারণে বন্ধ্যাযুগে ফিরে যেতে বসেছে, সেখানে এনার স্থান 'তিনশো নব্বই'টি গন্থ লেখকের পাশেই। এক সাক্ষাৎকারে বাবু বলেছিলেন, "আগে হাতের কাছে যা-ই পেতাম, পড়ে নিতাম । এখন আর পড়া হয়ে ওঠেনা ।" নির্লজ্জের মতো এমন কথা বোধহয় ট্রাম্পও বলবেন না ! এইসব অর্ধেন্দুদের জন্যই বাংলা সাহিত্যের ভবিষ্যৎ ষন্ডের অন্ডের মতো দোদুল্যমান । এত মানুষ মরে, অথচ এসব বিষাক্তকীটের মরণ হয়না ক্যানো ?

 এই কেচ্ছার শেষ করবো আমাদের বাড়ি থেকে ছ'মাইল দূরে আমার বাবার পিসেমশাইয়ের দাদার (আমার সাথে সম্পর্ক দাদু হন)  'পাগল' হয়ে যাবার ঘটনা দিয়ে । দাদুর জন্ম উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারে । পৈতৃক সম্পত্তিও ছিল, ছিল ছোটোখাটো ব্যবসা । স্বভাবে ছিলেন শান্ত ও দানশীল । সেসময়ে ভৃত্যদের সপ্তাহে একদিন ছুটি দিতেন। ... এমন সুখযাপন এক চুদিরভাইয়ের কানে গেল । তারপর তার শিষ্যরা এসে দাদুকে একদিন বললেন, "ঠাকুর তোকে সন্ধান করছে । সে সবাইকে ডাকে না । তুই তার ডাক পেয়েছিস । কালবিলম্ব করিসনে ।"  মূক্ষু মানুষ দু'বার না-ভেবেই তাদের কথা মতো গিয়ে দীক্ষা সেরে নেন এবং সেখানেই সপ্তাহখানেক বর্ণাঢ্য আতিথেয়তা লাভের পর পরম দয়াল তাকে নির্দেশ দ্যান, পরলোক ও পরজন্মের জন্য সমস্ত 'মায়া' ঠাকুরের কাছে বিসর্জন দিতে । ঠাকুরের মুখনিঃসৃত বাণী তিনি মাথায় করে বাড়ি এসে ভিটেবাড়ী-জমিজমা-ব্যবসা বিক্রি করে তাকে দান করার কিছুদিন পর সেখান থেকে বিতাড়িত হন এই শুনে, "তুই ঠাকুরের জন্যে কী করেছিস !" এতবড় আঘাত সইতে না পেরে তিনি সর্বশান্ত হয়ে বাকি জীবন কাটান । অন্তরমহলে ।
( আমি ক্লাস এইটে থাকার সময় সঙ্-পান্ডারা আমার স্বচোক্ষে দুই সিনিয়র নাস্তিক দাদাকে 'বিরিয়ানির লোভ' দেখিয়ে জনসমক্ষে দীক্ষা দ্যায় । যদিও তারা বিরিয়ানি খেয়েই কেটে পড়েছিল ।)
আমি একটি পাড়ার হিসাব দিলাম মাত্র । না জানি কতজনের পাঁচপুরুষের 'মায়া' ঐ বিকৃতমস্তিষ্কের পশুটা অসৎসঙ্গের নামে আত্মসাৎ করেছে !

 আজ আলাসিঙ্গার কাছে বিবেকানন্দের লেখা চিঠি পড়ছিলাম । কিছু অংশ না দিয়ে পারছি না ।
"....এসো, মানুষ হও। প্রথমে দুষ্ট পুরুতগুলোকে (ধর্মগুরু) দূর করে দাও । কারণ এই মস্তিষ্কহীন লোকগুলো কখনো শুধরোবে না । তাদের হৃদয়ের কখনো প্রসার হবে না । শত শত শতাব্দীর কুসংস্কার ও অত্যাচারের ফলে তাদের উদ্ভব; আগে তাদের নির্মূল করো । এসো, মানুষ হও। নিজেদের সঙ্কীর্ণ গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে গিয়ে দ্যাখো, সব জাতি ক্যামন উন্নতির পথে চলেছে । তোমরা কি মানুষকে ভালবাসো ? তোমরা কি দেশকে ভালবাসো ? তাহলে এসো, আমরা ভালো হবার জন্য - উন্নত হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি ।"

 একটি ছোট্ট সংশোধন, ----
'বন্দেপুরুষোত্তমম' কথাটি ব্যাকরণগতভাবে ভুল । 'পুরুষোত্তম' মানে পুরুষের মধ্যে শ্রেয়, সেখানে আবার  পোঁদে 'উত্তম' জুড়ে দেবার অর্থ কী ? যিনি সক্রেটিস-এ্যারিস্ততল-প্লেটোর মতো 'বান-ই' দেন, যার বাণীছন্দ এই সময়ের শ্রেষ্ঠ ছড়াকারের ন্যায়, তার চোখ এতবড় ভুলকেও এড়িয়ে গেল নাকি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা ?

পুনশ্চঃ - বদরগঞ্জে এক রমণী একদিন নির্জ্জনে বসিয়া নাম করিতেছেন, এমন সময় তাঁহার স্বামী বিদ্রপচ্ছলে তাঁহার পৃষ্টদেশে স্বীয় পদস্পর্শ করিলেন। তখন হঠাৎ কোথা হইতে বহুসংখ্যক মৌমাছি আসিয়া সেই ভদ্রলোকের মুখে দংশন করিয়া অস্থির করিয়া তুলিল। অবশেষে তিনি স্ত্রীর নিকটে ক্ষমা চাহিলে মধুমক্ষিকাগণ তাঁহাকে পরিত্যাগ করিল। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা৮৭)  

আমি যে (সব ধর্মের) এত সমালোচনা করি তবে আমাকে কেন মৌমাছি কামড়ায় নি (তবে একবার বোলতা কামড়েছিল) ? নাকি কামড়া-কামড়ি শুধু বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখে অসীমত্ব অর্জনের বৃথা চেষ্টা ?

 বি.দ্র. - লেখাটি সম্পূর্ণ আমার নয় । মুখোশ খুলতে আমি শুধু ধর্মগুরুদের মতো জোড়াতালি দিয়েছি । ঋণস্বীকার : দাদা, স্যর (হিন্দু স্কুলের শিক্ষক), ডি সি, মুক্তমনা ও সামহয়ারইন ব্লগ, নন্দন বোস, সুনীল চন্দ্র দাশ ও অন্যান্য ।

Sunday 5 March 2017

কৃষি-বিজ্ঞানী অনুকূল ঠাকুর এবং অন্যান্য প্র-সঙ্-গ


পর্ব - ১

সুদর্শন 

ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দিকে অবিভক্ত ভারতের উত্তরবঙ্গে পাবনা জেলার
পদ্মাবিধৌত অখ্যাত হিমাইতপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ পরিবারে যে শিশুটি জন্মেছিলেন, তিনি এক
কথায় অনবদ্য। যিনি পরবর্তীকালে আপন প্রজ্ঞায় বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের গুরুরূপে পূঁজিত হয়েছিলেন,
তিনি বিংশ শতাব্দির জাতি বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রাণের দেবতা-বিজ্ঞানী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্র। এমন বিজ্ঞানী দেবতার সম্বন্ধে আমার মত অধম কোন কিছু লিখতে যাওয়া বাতুলতা মাত্র। এ যেন অন্ধের হস্তীদর্মন। কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ, কোনটা লিখব, কোনটা লিখব
না, কোথা থেকে শুরু করব, কোথায় গিয়ে শেষ করব সব মিলিয়ে দিক-বিদিক জ্ঞান 
হারিয়ে ফেলি। তবুও পরম দয়াময়, করুণাময়, কৃপাসিন্ধুর আশীষ মাথায়
নিয়ে শুরু করলাম। 
>>>
আমরা পূর্ববর্তী সকল মহামতি অবতারগণকে দেখেছি তাঁরা খুব সাধন-ভজন-তপস্যা করে বাহ্যদশা, অর্দ্ধ-বাহ্যদশা ও অন্তর্দশার মাধ্যমে লোকচক্ষে অবতারের পরিচয় দিয়েছেন।
কিন্তু ভাবাবস্থায় তাঁদের মুখ থেকে কোন বাণী নির্গত হয় নাই। পরম দয়াল
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র যেন এঁদের থেকে ভিন্ন। ভাবসমাধি অবস্থায় তাঁর
(?)শ্রীমুখ দিয়ে অনর্গলভাবে বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য বাণী তড়িৎ গতিতে নির্গত হত (যা লিপিবদ্ধ করার সূত্র পিটম্যানও আবিষ্কার করে যেতে পারেননি) । তার মধ্যে
শুধুমাত্র ৭১ দিনের বাংলা ও কিছু ইংরেজী বাণীগুলো দিয়ে “পূণ্য পুঁথি” নামে
একটি মহাগ্রন্থ তৈরী হয়েছে।

এর শিষ্যদের মধ্যে এক অদ্ভুত আচার দেখা যায়। এরা হাগতে গেলেও এক পয়সা গুরুর নামে একটা ভাঁড়ে জমা দিয়ে হাগতে বসে ! এটি ছিঃ ছিঃ ঠাকুরে দীক্ষিত শিষ্যদের অবশ্য কর্তব্য - সর্বদা গুরুকে স্মরণ করিবে ! হাগতে গেলেও করিবে ! কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমাশায় সর্বত্র গুরুকে স্বরণ করা এই কূলের ( যা সৎসঙ্গ) নিয়ম ! গুরু ঠাকুরকে এক পয়সা ভাঁড়ে দিলে , উনি কোষ্টকাঠিন্যে পায়খানা তরল করিবেন, আমাশায় আঁটি বাঁধিবেন ! অহ ! এমন জগৎগুরুর শিষ্যরাই জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে ! সারা ভারত থেকে মহাভীতি কাটানোর জন্য প্রতি মাসে কয়েকশো কোটি ইষ্টভৃতি বিনে ট্যাক্সে দেওঘর চলে যাচ্ছে । এই পদ্ধতিটা মোদিজী আয়ত্তে আনতে পারলে সাধারণ মানুষকে কি আর ডিমনিটাইজেশনের ফল ভোগ করতে হত? 
"এই দান লইয়া কী করিবেন আপনারা ?" - জিগাইলে এদের উত্তরও রেডি । "একবার দেওঘরে গিয়ে দেখুন। সব পরিস্কার হয়ে যাবে ।" আপনি যদি হাওড়া হয়ে দেওঘর যান তবে হাওড়া স্টেশন থেকে বেরিয়েই আপনি হনুর একটি পোস্টার দেখতে পাবেন, যেখানে একটি বাণীতে লেখা আছে এরকম, "ভারতবর্ষের সেদিন থেকে পতন হয়েছে, যেদিন থেকে ভারতবর্ষের মানুষ তাদের মুনি-ঋষিদের কথা অবজ্ঞা করতে শুরু করেছে ।" মুনি-ঋষি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে সেটা পাঠক টের পেয়েছেন নিশ্চয়ই। 

যাই হোক, শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাবাদর্শের মূলকথা হল
অস্তিত্ববাদ। সব বাদের সেরা বাদ ও পরিপূরক এবং যেমন ভাবে নুকূর শিষ্যরা প্রচার করেন যে নুকূর 'বাণী'র সাথে প্লেটো-এ্যারিস্ততলের 'কথা'র মিল আছে তারা এবার বলবেন অনুকূলাপ্রাণিত হয়েই সাত্রোঁ লিখেছেন "Being & Nothingness" । 

সত্তাবাদের মূল সুর
হল-“মরো না, মেরো না, পারতো মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর”। 

✘ একবার রাতুলপাড়ার শ্রীযুক্ত শ্রীকান্ত সরকার- মহাশয় ভয়ানক পীড়িতাবস্থায় সপরিবারে কুষ্টিয়াতে রহিয়াছেন। গুরুভ্রাতাগণ প্রাণেপণে যত্ন, শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বড়-বড় এম-বি, এল-এম-এস ডাক্তারগণ রোগীর জীবনের কোন আশা নাই বলিয়া জবাব দিয়াছেন। হোমিওপ্যাথিক মতে চিকিৎসা করিয়া আমিও কৃতকার্য্য হইতে পারিলাম না। রাত্রে মোক্তারবাবু বীরেন্দ্রনাথ রায় ও আমার কম্পাউণ্ডার শ্রীমান্ উপেন্দ্রনাথ দে রোগীর শুশ্রূষা ও প্রহরায় নিযুক্ত হইলেন। তাঁহারা খুব নাম নাম করিতেছেন ( এই সত্যনাম)। নিশীথকালে শ্রীকান্তের প্রাণপক্ষী দেহপিঞ্জর পরিত্যাগ করিল। এত রাত্রে প্রকাশ করা উচিত নয় বিবেচনায় তাঁহারা চুক করিয়া রহিলেন। পরে তাঁহারা পরামর্শ করিলেন যে, এই সত্যনামে অনেক মুমূর্ষু এবং মৃতব্যক্তি বাঁচিয়া গিয়াছে। ইহাকে নাম দ্বারা চেষ্ঠা করিয়া দেখিলে হয়। এই বলিয়া তাঁহারা প্রাণপণে নাম করিতে লাগিলেন এবং তাঁহার মুখে একটু চরণামৃত ঢালিয়া দিলেন। রজনী প্রভাত হইবার সঙ্গে-সঙ্গে শ্রীকান্ত আবার বাঁচিয়া উঠিলেন। আনন্দের আর সীমা নাই। সকলেরই যেন স্বপ্নবৎ বোধ হইতে লাগিল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র - সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৯১) 

✘ আরেকবার হিমাইতপুরের দেবীদাস চৌধুরী মহাশয়ের পুত্র শ্রীযুক্ত হেমচন্দ্র চৌধুরী মহাশয় শয্যাগত পীড়িত। রোগযন্ত্রণায় ছটফট করিতেছেন। আমি তাঁহাকে দেখিতে গেলাম। তিনি বলিলেন- “দাদা, বড় যন্ত্রণা, কিন্তু বড় আশ্চর্য্য কথা, যখনই আমি ঠাকুরের প্রচারিত নাম করি তখনই আমার রোগযন্ত্রণার কিঞ্চিত উমশম বোধ হয়; আমি একটু শান্তি পাই। কিন্তু আমি পূর্ব্ব থেকে যে সমস্ত নাম ক’রে থাকি, তাতে কোন উপকার পাই না কেন, কিছুই বুঝতে পারি না। আবার, সে-সকল নাম ছাড়তেও প্রাণ চায় না, তাই সেই নাম করি, কিন্তু তাতে রোগযন্ত্রণার কোন উপশম হয় না, তখন পরীক্ষা করতে গিযে ঠাকুরের নাম করি, অমনি যন্ত্রণার কিছু উপশম হয়, কিছু শান্তি বোধ হয়। এইরূপ আজ তিনদিন অনেকবার পরীক্ষা ক’রে বুঝলাম-ঠাকুরের নামই সর্বশ্রেষ্ট শক্তিমান নাম বটে। প্রথম মনে করেছিলাম, আমার মা ঐ সত্যনাম করেন তাই তাইতে বোধহয় আমার মনের এই অবস্থা, কিন্তু বাস্তবিক পরীক্ষা ক’রে দেখলাম তা’ নয়, ঐ নামের খুব শক্তি বটে।’’ আমি তাঁহার মন পরীক্ষা করিবার জন্য বলিলাম- “যদি এ –কথা সত্য হয় তবে এই ঘটনা সত্য ব’লে নাম-স্বক্ষর ক’রে দিন।’’ তিনি অম্লানবদনে সন্তোষ- সহকারে তাহাই করিলেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৮৬) 

✔ যুধিষ্ঠিরের ঘটে এতটুকু বুদ্ধি ছিলো না !

✔এক মহাত্মা তো নিজের 'মন কি বাত' গোপন রাখতে না পেরে বলেই ফেলেছিলেন, "পূর্ববঙ্গের এক স্বীয়প্রচারিত ভগবানও নিজের ভক্তদের নয়, নিজেই দাঙ্গার সময় মোল্লাদের হাত থেকে 'মৃত্যুকে অবলুপ্ত করতে না পেরে' দেওঘরে পালিয়ে এসেছিলেন।" 

✘ অনেক স্থান হইতে অনেক ভদ্রাভদ্র পুরুষ-রমণী যাঁহারা কখনও তাঁহাকে দর্শন করেন নাই বা তাঁহার নাম-ধাম অথবা তাঁহার বিষয় কিছুই পূর্ব্বে শ্রবণ করেন নাই তাঁহারাও স্বপ্নযোগে শ্রীশ্রীঠাকুরকে দর্শন এবং তাঁহার প্রচারিত সাধন- প্রণালীর দীক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াছেন এবং ইনিই তাঁহাদের একমাত্র আরাধ্য পরমপুরুষ বলিয়া জানিতে পারিয়াছেন। এইরূপ স্বপ্নদর্শনে অনেকে আকুল প্রাণে ছুটিয়া আসিয়া তাঁহার চরণে লুটিয়া পড়িতেছেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৭১) 

✔ কাহিনীর কোন বাস্তব ভিত্তি আছে? সাইদী যেভাবে টাকার বিনিময়ে তথাকথিত নিন্মবর্গের হিন্দুদের ও বৌদ্ধদের মুসলমান বানাত সেই কাহিনীর মত হয়ে গেল না? আর তিনি কেন গুটি কয়েক মানুষকে স্বপ্নে দীক্ষা দিলেন? সবাইকে কেন এভাবে দীক্ষা দিলেন না? নাকি সাইদীর মত টাকার বিনিময়ে মানুষ এইসব কাহিনী ছড়াত ? কাহিনীটা অনেকটা মোহাম্মদের শিষ্যদের সাথে মিলে যায় । 

✘অন্যান্য বালকদিগের দেখাদেখি ও কাহারও অনুরোধে(?) একদিন বালক পদ্মানদীতে ছিপে মৎস ধরিতে গিয়াছিলেন। তাঁহার ছিপে একটা বড় মাছ ধরিল। মাছ ধরা পড়িয়া কষ্ট পাইল বা মরিয়া যাইবে মনে করিয়া তিনি কাঁদিয়া আকুল হইলেন। মাছ ছাড়াইয়া বাঁচাইয়া দিবার জন্য উপস্থিত লোকদিগকে সকাতরে অনুরোধ করিতে লাগিলেন। তখন তাহারা মাছটি ছাড়াইয়া জলে ছাড়িয়া দিলে শান্ত হইলেন। আর কখনও সে-কার্য্য করেন নাই। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা৪২) 

✔অনুকূল ভক্তরা দাবি করেন, তাদের গুরু ভগবান এবং তিনি মানুষরূপে এসেছেন পাপীদের উদ্ধার করতে ! তার প্রতিটি বাণীতে নাকি জ্ঞান ঝরে পড়ে ! আচ্ছা এত জ্ঞানী গুণী মানুষ অথচ মাছ ধরার আগে কি মনে ছিল না যে ছিপ দিয়ে ধরলে মাছটি ব্যাথা পাবে? 

✘একদিন বলিলেন- “পূর্ব্বে মাছও খেয়েছি কিন্তু তাতে সাধনার ফল ভাল হয় নাই। তাই লোককে মাছ-মাংস খেতে নিষেধ করি। মাছ-মাংস খেলে ধ্যানের জ্যোতিঃ স্পষ্ট দেখা যায় না, ধোঁয়া দেখা যায়। স্মৃতিশক্তির বিঘ্ন হয়। স্ফূর্ত্তির হানি হয়। আমি দেখতাম-আমিষ খেলে আমার স্মৃতিশক্তি কম হ’ত। আমিষ খাওয়ার ফলে স্বপ্নে ও ধ্যানে দুষ্ট-বিষয় ঠিক- ঠিক মনে থাকে না। আমিষে রিপুর উত্তেজনা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। স্তত্ত্বিক- আহারে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়। সাত্ত্বিক- আহারে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়।’’ (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৭২) 

✔আমিষ খেলে যদি আয়ু কমে তবে, ভারতে ৪২% নিরামিষভোজী থাকা স্বত্তেও কেন আমিষভোজী আমেরিকানদের গড় আয়ু ভারতীয়দের চাইতে বেশী? প্রায় অর্ধেক নিরামিষভোজী ভারতীয়দের গড় আয়ু ৬৬.২১ বছর! আর মাংসাশী আমেরিকানদের গড় আয়ু ৭৮.৭৪ বছর ! 
http://matadornetwork.com/trips/5-best-countries-world-vegetarians/?single=1 

বাটীর ভৃত্য কোন দূরবর্ত্তী স্থান হইতে কতকগুলি নারিকেল মস্তকে বহন করিয়া আনিতেছিল। পথিমধ্যে তাহার বড় কষ্ট হেইতেছে দেখিয়া বালক নিজসম্তকে নারিকেলের বোঝা বহন করিতে লাগিলেন। কিছুদূর গমন করতঃ ক্লান্ত হইয়া বলিলেন- “আর তো পারি না”।এমন সময় তিনি দেখিলেন, শ্রী শ্রী কালীমাতা তাঁহার বোঝা মস্তক উচ্চ করিয়া বহন করতঃ লইয়া যাইতেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৪১) 

✔এই ঘটনার বাস্তব কোন ভিত্তি আছে? ঘটনাটি কে দেখেছে তা কিন্তু লেখক উল্লেখ করেন নি ! যদি ঠাকুরই হবে তবে বোঝা বহনে আবার কষ্ট কী ! আর এক ব্রাহ্মণ ভগবান কীভাবে অনার্য দেবী 'কালী'র সাহায্য নিল ?

✘ উক্ত শ্রীশবাবুর( শ্রীশচন্দ্র নন্দী) স্ত্রীর উদরাভ্যস্তরে আব(tumour) হইয়াছিল। ডাক্তারগণ বলিলেন- রোগ দুরারোগ্য। একদিন আকস্মিক ঘটনাবশতঃ তাঁহার ছোট কন্যার পদাঘাত লাগিয়া সেই টিউমার পেটের মধ্যেই ফাটিয়া গেল। তখন আরও ভয়ঙ্কর কাণ্ড হইয়া পড়িল। তাহাতে রোগীর পেরিটোনাইটিস্ নামক সাংঘাতিক ব্যাধি উপস্থিত হইল। তিনি মৃতপ্রায় হইয়া পড়িলেন। বড়-বড় ডাক্তার বলিলেন- “বাঁচিবার কোন আশা নাই।” সেই রাত্রেই মৃত্যু নিশ্চই স্থির হইল। শ্রীবাবুর স্ত্রীর জীবনলাভের উদ্দেশ্যে অনন্যোপায় হইয়া শ্রীশ্রীঠাকুরের নিকট প্রার্থনা-সহকারে সাধ্যানুসারে সত্যনাম করিতে লাগিলেন্ কি অদ্ভুত ব্যাপার! সেই রাত্রি হইতেই রোগী সুস্থ হইতে আরম্ভ করিয়া অত্যল্পকাল মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হইলেন। ল(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৮৯) 
✘ আরেকবার রাতুলপাড়ার শ্রীযুক্ত শ্রীকান্ত সরকার- মহাশয় ভয়ানক পীড়িতাবস্থায় সপরিবারে কুষ্টিয়াতে রহিয়াছেন। গুরুভ্রাতাগণ প্রাণেপণে যত্ন, শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বড়-বড় এম-বি, এল-এম-এস ডাক্তারগণ রোগীর জীবনের কোন আশা নাই বলিয়া জবাব দিয়াছেন। হোমিওপ্যাথিক মতে চিকিৎসা করিয়া আমিও কৃতকার্য্য হইতে পারিলাম না। রাত্রে মোক্তারবাবু বীরেন্দ্রনাথ রায় ও আমার কম্পাউণ্ডার শ্রীমান্ উপেন্দ্রনাথ দে রোগীর শুশ্রূষা ও প্রহরায় নিযুক্ত হইলেন। তাঁহারা খুব নাম নাম করিতেছেন ( এই সত্যনাম)। নিশীথকালে শ্রীকান্তের প্রাণপক্ষী দেহপিঞ্জর পরিত্যাগ করিল। এত রাত্রে প্রকাশ করা উচিত নয় বিবেচনায় তাঁহারা চুক করিয়া রহিলেন। পরে তাঁহারা পরামর্শ করিলেন যে, এই সত্যনামে অনেক মুমূর্ষু এবং মৃতব্যক্তি বাঁচিয়া গিয়াছে। ইহাকে নাম দ্বারা চেষ্ঠা করিয়া দেখিলে হয়। এই বলিয়া তাঁহারা প্রাণপণে নাম করিতে লাগিলেন এবং তাঁহার মুখে একটু চরণামৃত ঢালিয়া দিলেন। রজনী প্রভাত হইবার সঙ্গে-সঙ্গে শ্রীকান্ত আবার বাঁচিয়া উঠিলেন। আনন্দের আর সীমা নাই। সকলেরই যেন স্বপ্নবৎ বোধ হইতে লাগিল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৯১) 

✔ যদি সত্যনামে রোগ ভাল হয়ে যেত তবে অনুকূল ঠাকুর নিজে কেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতেন? আর নিজের ছোট ছেলেকে কেন ডাক্তারি পড়িয়েছিলেন? কেউ রোগাক্রান্ত হয়ে আসলে তিনি তাঁদের ওষুধের বদলে সত্যনাম দিলেই পারতেন! রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভারতের সরকারের হাসপাতাল ও ডাক্তারদের পিছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হত না ! আমেরিকা থেকে ওষুধ আমদানির বদলে সত্যনাম রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হত ! তাই নয় কি ? দিলীপ বাবু এই নীতি শিখলে নিন্দুকদের মুখ লুকানোর জায়গা থাকবে না ।

✘কখন-কখন তাঁহাকে ভোজন করাইবার জন্য সুন্দর আসন পাতিয়া দেওয়া হইলে এবং তাঁহার সম্মুখে নানাপ্রকার চর্ব্ব- চূষ্য-লেহ্য-পেয় সামগ্রী সুসজ্জিত করিয়া দেওয়া হইলে তিনি সেই সমস্ত জিনিস দেখিয়া বিষণ্ন হইয়া অশ্রুপাত করতঃবলিয়াছেন- ‘হায়!হায়! তোমরা আমাকে ঠাকুর করেছ, আমি ছিলাম একটি বামুনের ছেলে, পরে হলেম ডাক্তারবাবু, আবার এখন তোমরা আমাকে বল ঠাকুর, আর আমার জন্য এত বহুমূল্য সুন্দর খাদ্যদ্রব্য থরে-থরে সাজিয়ে ুদয়েছ। তোমাদের কত গরীব ভাই কত স্থানে একমুষ্টি চাউলের অভাবে কত কষ্ট পাচ্ছে তা’ তো তোমরা দেখছ না।” (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা – ১০৩)

✔ যার নামের গুণে মৃত মানুষ জীবিত হয়ে যায় তার ভক্তরা কেন না খেয়ে মরবে ? শুধু নামযপ করলেই ভারত 'হাঙ্গার ইন্ডেক্সে' শীর্ষস্থানে থাকতো !

✘ কলিকাতার ৭নং দীনবন্ধু লেন-এর শ্রীযুক্ত বাবু আশুতোষ ঘোষ, বি-এ, বি-এল, মহাশয় কুচবিহারের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট (নায়েব আহেলকার)। তিনি বিখ্যাত মহাপুরুষ স্বর্গত ঠাকুরদাস
বাবাজীর শিষ্য। নানকপন্থী। শ্রীশ্রীঠাকুরকে দর্শন করত এবং এই সত্যনাম সাধন-প্রণালী অবগত হইয়া বিশেষ সন্তোষলাভ করিয়াছেন। তিনি পুনরায় এই সত্যনামে দীক্ষিত হইবেন স্থির করিয়াছেন। কিন্তু মনে সময়ে-সময়ে একটু সন্দেহ আসিতেছে। গত ৬ই অগ্রহায়ণ রাত্রে তাঁহার নিদ্রা ভঙ্গ হইল।তখন তাঁহার অর্দ্ধনিদ্রা, অর্দ্ধজাগরণবৎ অবস্থা তিনি স্পষ্ট শ্রবণ করিলেন-তাঁহার স্বর্গীয় গুরুদেব
বলিতেছেন- “আমার মন্ত্র ফিরিয়ে দিলে আক্ষেপ নাই। যে-পথ অবলম্বন ক’রতে যাচ্ছ-তা বেশ। তাতেই মঙ্গল হবে।” এই ঘটনার পরেই তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের এই সত্যনামেই দীক্ষিত হইয়াছিলেন।(শ্রী শ্রী
ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা১৫৩)

✔ ঠাকুরের বাণীতে আছে নিজ গুরু ছাড়ার মত
ঘৃণ্য কাজ আর নাই ! যারা নিজ গুরু ছাড়ে তাদের ইহ ও পরজগৎ কোথাও ঠাঁই নাই! কোরানে বর্ণিত আছে, ইসলাম ত্যাগ করলে তার জন্য থাকবে দোজখের আগুন । নুকূ ভক্তরা কী বলছেন ?

অনুকূলের ভূত
""""""""""""

✘কুষ্টিয়ার এক গ্রামে এক বাড়ীতে ভূতের উপদ্রব হয়। ঘরে তালাচাবি বন্ধ করিয়া রাখিলে আপনা-আপনি সে তালাচাবি খুলিয়া যায়। নানারূপ চেষ্টা করিয়াও তাহার কোন প্রতিকার হইল না। রাম-নামে ভূত পলায়ন করে, এই ধারণায় সেই ঘরের দরজায় রাম-নাম লিখিয়া দেওয়া হইল। তাহাতে কোন ফল হইল না। পরে কৃষ্ণ-কালী-দুর্গানাম লিখিয়া দেওয়া হইল। কোন ফল হইল না। অবশেষে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রদত্ত সত্যনাম কাগজে লিখিয়া সেই দরজায় আঁটিয়া দিলে তাহার পরক্ষণ হইতেই সেই ভূতের উপদ্রব বন্ধ হইয়া গেল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ১৯২)

✔তার মানে অনুকূল ঠাকুরের দেওয়া নাম ছাড়া বাকি সব নামের কোন কার্যকারিতা নেই! তার মানে এতদিন ধরে যারা হরি, কৃষ্ণ,কালী নাম নিয়েছে তাদের কোন উপকার হয়নি? এব্যপারে অনুকূল ভক্ত ছাড়া বাদবাকি হিন্দুরা কি বলবেন? 

✘কলিকাতা মাণিকতলা শ্রীযুক্ত বাবু গৌরচন্দ্র নন্দী-মহাশয়ের আপার সার্কুলার রোডের বাটীতে প্রায় তিন বৎসর পূর্ব্বে একজন পৌঢ়া রমণীর ভূতাবেশ হয়। লোককে ভূতে ধরিলে যেরূপ ব্যবহার ও কথাবর্ত্তার গল্প শুনিতে পাওয়া যায় তিনি সেইরূপ করিতেন। নানারূপ চিকিৎসা ও ভূতুড়ে চিকিৎসা অবলম্বন সত্ত্বেও কোন ফল হইল না। ভুবনচন্দ্র নাথ নামক একটি পূর্ব্ববঙ্গবাসী বালক সেই বাড়ীতে থকিয়া কলেজে অধ্যয়ন করিত। সে একদিন শ্রীশ্রীঠাকুরের একখানা ফটো আনিয়া ঐ ভূতাবিষ্ট ব্যক্তিকে দেখাইলে তিনি বিকট চীৎকার করিতে-করিতে বলিতে লাগিলেন- “ও কার চেহারা, ওটা শীগগির সরিয়ে ফেল, ওটি আমি দেখতে পারব না, দেখলে আমার বড় ভয় হয়। আমি এখনি তোমাদের বাড়ী থেকে যাচ্ছি।” যে-ঘরের দরজায় ঐ ফটো রাখা হইত সে-ঘরে এ- রমণী যাইতে পারিতেন না। ১৪৮নং মানিকতলা রোডের ওরিয়েন্টাল মেডিকেল স্টোর নামক ডাক্তারখানার মালিক শ্রীযুক্ত বাবু নগেন্দ্রনাথ ঘোষাল মহাশয় সেই ফটোখানি দিয়াছিলেন। তিনি তাঁহার ফটো লইয়া যাইবার পর ঐ স্ত্রীলোকটির পুনরায় ভূতাবেশ হইল। তখন তাঁহার একখানা ফটো কিনিয়া ঘরে রাখিয়া দিলে ভূত ছাড়িয়া গেল, আর আসিল না।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ১৯২) 

✔এখন থেকে সব দেবতা বাদ! অনুকূল ঠাকুর জিন্দাবাদ ! 

✘হিমাইতপুর গ্রামে এক সময়ে খুব কলেরা হইতেছিল। শ্রীশ্রীঠাকুর রত্রিকালে রাস্তায় গমন করিতে-করিতে দেখিলেন যেন একটি স্ত্রীমূর্ত্তি তাঁহার সম্মুখ দিয়া যাইতেছে। তিনি তাহার দিকে মনোযোগ দিবামাত্র তাঁহার ললাট হইতে একটি উজ্জল আলো ছুটিয়া ঐ স্ত্রী- মূর্ত্তির দিকে গেল। মূর্ত্তি খুব বেগে দৌড়াইতে লাগিল। আলোটিও তাহার পশ্চাদ্ধান করিতে থাকিল। পরে সেই স্ত্রীমূর্ত্তি আকাশে উঠিয়া শূন্যমার্গে চলিতে লাগিল, আলোটিও তাহার পশ্চাদনুসরণ করিতে লাগিল। শেষে ৫/৬ মাইল দূরে ঠিক যেন দোগাছি গ্রামে স্ত্রীমূর্ত্তিটি অবতীর্ণ হইল।আলোটি ফিরিয়া আসিল। পরদিনই হিমাইতপুরের কলেরা বন্ধ হইল এবং দোগাছিতে কলেরা আরম্ভ হইল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা১৯৩)

✔অনুকূল ঠাকুরের একটি বাণী আছে, 

বুদ্ধ ঈশায় বিভেদ করিস
শ্রীচৈতন্যে রসুল কৃষ্ঞে জীবোদ্ধারে হন আবির্ভাব
একই ওঁরা তাও জানিস নে?

তা অনুকূল ঠাকুর কলেরা থেকে নিজের গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করলেন কিন্তু পাশের গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করলেন না কেন? যে ব্যাক্তি একদল লোককে বাঁচাতে গিয়ে অন্যদল লোককে মেরে ফেলে তার সততা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় ! নাকি বাকিদের উদ্ধার করতে নতুন কেউ(বন্দে বন্দে পুরুষোত্তম) আবির্ভাব হবেন নতুন কোন সত্যনাম নিয়ে ! 

Thursday 2 March 2017

সময়ের প্রয়োজনে


রুদ্র চিন্ময়

তুমি শুধুমাত্র সময়ের প্রয়োজনে
আমায় ভালবেসেছিলে, কাছে এসেছিলে।
শুধুমাত্র সময়ের প্রয়োজনে তীব্র শীতেও
তোমার চুল উড়ছিল মৃদু উষ্ণ বাতাসে।
সময়ের প্রয়োজনে বাহিরে উঠেছিল ঝড়
আছড়ে পড়ছিল ঘরের দুয়ারে।
বৃষ্টি, বাতাস আর বিদ্যুৎ ঝলকানিতে
দেখেছিলাম তোমার উন্মত্ত এক রূপ,
সবই ছিল সময়ের প্রয়োজনে।
সময়ের প্রয়োজনে আমার বাগানে
ফুটেছিলে হয়ে ফুল, পাতাহীন এক ডালে।
সময়ের প্রয়োজনে সময় ছুটেছিল
প্রজাপতির রঙিন ডানায় বসন্ত বনে।

একদিন, তুমি হারিয়ে গেলে সময় ফাঁদে,
ডানা ভেঙে আমি ছিটকে পড়ি সময় বানে।
শুধুমাত্র সময়ের দাবি মেটাতে,
ক্লান্ত সময় ছুটছে আজ অসীম পানে,
একদা সে ঘুমিয়ে যাবে সময় স্রোতে।
আবারও হয়তো উঠবে জেগে, নতুনের হাত ধরে,
আবারও হয়তো সময় রচিবে নতুন কাব্য,
শুধুমাত্র, সময়েরই প্রয়োজনে।

বিজেপির ভোটের রাজনীতি আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবনা - শিমুল টিকাদার

লিখেছেন : শিমুল টিকাদার আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । আমাদের সম্প্রদায়ের বড়ো একটি অংশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষ...