Sunday 5 March 2017

কৃষি-বিজ্ঞানী অনুকূল ঠাকুর এবং অন্যান্য প্র-সঙ্-গ


পর্ব - ১

সুদর্শন 

ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দিকে অবিভক্ত ভারতের উত্তরবঙ্গে পাবনা জেলার
পদ্মাবিধৌত অখ্যাত হিমাইতপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ পরিবারে যে শিশুটি জন্মেছিলেন, তিনি এক
কথায় অনবদ্য। যিনি পরবর্তীকালে আপন প্রজ্ঞায় বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের গুরুরূপে পূঁজিত হয়েছিলেন,
তিনি বিংশ শতাব্দির জাতি বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রাণের দেবতা-বিজ্ঞানী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্র। এমন বিজ্ঞানী দেবতার সম্বন্ধে আমার মত অধম কোন কিছু লিখতে যাওয়া বাতুলতা মাত্র। এ যেন অন্ধের হস্তীদর্মন। কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ, কোনটা লিখব, কোনটা লিখব
না, কোথা থেকে শুরু করব, কোথায় গিয়ে শেষ করব সব মিলিয়ে দিক-বিদিক জ্ঞান 
হারিয়ে ফেলি। তবুও পরম দয়াময়, করুণাময়, কৃপাসিন্ধুর আশীষ মাথায়
নিয়ে শুরু করলাম। 
>>>
আমরা পূর্ববর্তী সকল মহামতি অবতারগণকে দেখেছি তাঁরা খুব সাধন-ভজন-তপস্যা করে বাহ্যদশা, অর্দ্ধ-বাহ্যদশা ও অন্তর্দশার মাধ্যমে লোকচক্ষে অবতারের পরিচয় দিয়েছেন।
কিন্তু ভাবাবস্থায় তাঁদের মুখ থেকে কোন বাণী নির্গত হয় নাই। পরম দয়াল
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র যেন এঁদের থেকে ভিন্ন। ভাবসমাধি অবস্থায় তাঁর
(?)শ্রীমুখ দিয়ে অনর্গলভাবে বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য বাণী তড়িৎ গতিতে নির্গত হত (যা লিপিবদ্ধ করার সূত্র পিটম্যানও আবিষ্কার করে যেতে পারেননি) । তার মধ্যে
শুধুমাত্র ৭১ দিনের বাংলা ও কিছু ইংরেজী বাণীগুলো দিয়ে “পূণ্য পুঁথি” নামে
একটি মহাগ্রন্থ তৈরী হয়েছে।

এর শিষ্যদের মধ্যে এক অদ্ভুত আচার দেখা যায়। এরা হাগতে গেলেও এক পয়সা গুরুর নামে একটা ভাঁড়ে জমা দিয়ে হাগতে বসে ! এটি ছিঃ ছিঃ ঠাকুরে দীক্ষিত শিষ্যদের অবশ্য কর্তব্য - সর্বদা গুরুকে স্মরণ করিবে ! হাগতে গেলেও করিবে ! কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমাশায় সর্বত্র গুরুকে স্বরণ করা এই কূলের ( যা সৎসঙ্গ) নিয়ম ! গুরু ঠাকুরকে এক পয়সা ভাঁড়ে দিলে , উনি কোষ্টকাঠিন্যে পায়খানা তরল করিবেন, আমাশায় আঁটি বাঁধিবেন ! অহ ! এমন জগৎগুরুর শিষ্যরাই জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে ! সারা ভারত থেকে মহাভীতি কাটানোর জন্য প্রতি মাসে কয়েকশো কোটি ইষ্টভৃতি বিনে ট্যাক্সে দেওঘর চলে যাচ্ছে । এই পদ্ধতিটা মোদিজী আয়ত্তে আনতে পারলে সাধারণ মানুষকে কি আর ডিমনিটাইজেশনের ফল ভোগ করতে হত? 
"এই দান লইয়া কী করিবেন আপনারা ?" - জিগাইলে এদের উত্তরও রেডি । "একবার দেওঘরে গিয়ে দেখুন। সব পরিস্কার হয়ে যাবে ।" আপনি যদি হাওড়া হয়ে দেওঘর যান তবে হাওড়া স্টেশন থেকে বেরিয়েই আপনি হনুর একটি পোস্টার দেখতে পাবেন, যেখানে একটি বাণীতে লেখা আছে এরকম, "ভারতবর্ষের সেদিন থেকে পতন হয়েছে, যেদিন থেকে ভারতবর্ষের মানুষ তাদের মুনি-ঋষিদের কথা অবজ্ঞা করতে শুরু করেছে ।" মুনি-ঋষি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে সেটা পাঠক টের পেয়েছেন নিশ্চয়ই। 

যাই হোক, শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাবাদর্শের মূলকথা হল
অস্তিত্ববাদ। সব বাদের সেরা বাদ ও পরিপূরক এবং যেমন ভাবে নুকূর শিষ্যরা প্রচার করেন যে নুকূর 'বাণী'র সাথে প্লেটো-এ্যারিস্ততলের 'কথা'র মিল আছে তারা এবার বলবেন অনুকূলাপ্রাণিত হয়েই সাত্রোঁ লিখেছেন "Being & Nothingness" । 

সত্তাবাদের মূল সুর
হল-“মরো না, মেরো না, পারতো মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর”। 

✘ একবার রাতুলপাড়ার শ্রীযুক্ত শ্রীকান্ত সরকার- মহাশয় ভয়ানক পীড়িতাবস্থায় সপরিবারে কুষ্টিয়াতে রহিয়াছেন। গুরুভ্রাতাগণ প্রাণেপণে যত্ন, শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বড়-বড় এম-বি, এল-এম-এস ডাক্তারগণ রোগীর জীবনের কোন আশা নাই বলিয়া জবাব দিয়াছেন। হোমিওপ্যাথিক মতে চিকিৎসা করিয়া আমিও কৃতকার্য্য হইতে পারিলাম না। রাত্রে মোক্তারবাবু বীরেন্দ্রনাথ রায় ও আমার কম্পাউণ্ডার শ্রীমান্ উপেন্দ্রনাথ দে রোগীর শুশ্রূষা ও প্রহরায় নিযুক্ত হইলেন। তাঁহারা খুব নাম নাম করিতেছেন ( এই সত্যনাম)। নিশীথকালে শ্রীকান্তের প্রাণপক্ষী দেহপিঞ্জর পরিত্যাগ করিল। এত রাত্রে প্রকাশ করা উচিত নয় বিবেচনায় তাঁহারা চুক করিয়া রহিলেন। পরে তাঁহারা পরামর্শ করিলেন যে, এই সত্যনামে অনেক মুমূর্ষু এবং মৃতব্যক্তি বাঁচিয়া গিয়াছে। ইহাকে নাম দ্বারা চেষ্ঠা করিয়া দেখিলে হয়। এই বলিয়া তাঁহারা প্রাণপণে নাম করিতে লাগিলেন এবং তাঁহার মুখে একটু চরণামৃত ঢালিয়া দিলেন। রজনী প্রভাত হইবার সঙ্গে-সঙ্গে শ্রীকান্ত আবার বাঁচিয়া উঠিলেন। আনন্দের আর সীমা নাই। সকলেরই যেন স্বপ্নবৎ বোধ হইতে লাগিল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র - সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৯১) 

✘ আরেকবার হিমাইতপুরের দেবীদাস চৌধুরী মহাশয়ের পুত্র শ্রীযুক্ত হেমচন্দ্র চৌধুরী মহাশয় শয্যাগত পীড়িত। রোগযন্ত্রণায় ছটফট করিতেছেন। আমি তাঁহাকে দেখিতে গেলাম। তিনি বলিলেন- “দাদা, বড় যন্ত্রণা, কিন্তু বড় আশ্চর্য্য কথা, যখনই আমি ঠাকুরের প্রচারিত নাম করি তখনই আমার রোগযন্ত্রণার কিঞ্চিত উমশম বোধ হয়; আমি একটু শান্তি পাই। কিন্তু আমি পূর্ব্ব থেকে যে সমস্ত নাম ক’রে থাকি, তাতে কোন উপকার পাই না কেন, কিছুই বুঝতে পারি না। আবার, সে-সকল নাম ছাড়তেও প্রাণ চায় না, তাই সেই নাম করি, কিন্তু তাতে রোগযন্ত্রণার কোন উপশম হয় না, তখন পরীক্ষা করতে গিযে ঠাকুরের নাম করি, অমনি যন্ত্রণার কিছু উপশম হয়, কিছু শান্তি বোধ হয়। এইরূপ আজ তিনদিন অনেকবার পরীক্ষা ক’রে বুঝলাম-ঠাকুরের নামই সর্বশ্রেষ্ট শক্তিমান নাম বটে। প্রথম মনে করেছিলাম, আমার মা ঐ সত্যনাম করেন তাই তাইতে বোধহয় আমার মনের এই অবস্থা, কিন্তু বাস্তবিক পরীক্ষা ক’রে দেখলাম তা’ নয়, ঐ নামের খুব শক্তি বটে।’’ আমি তাঁহার মন পরীক্ষা করিবার জন্য বলিলাম- “যদি এ –কথা সত্য হয় তবে এই ঘটনা সত্য ব’লে নাম-স্বক্ষর ক’রে দিন।’’ তিনি অম্লানবদনে সন্তোষ- সহকারে তাহাই করিলেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৮৬) 

✔ যুধিষ্ঠিরের ঘটে এতটুকু বুদ্ধি ছিলো না !

✔এক মহাত্মা তো নিজের 'মন কি বাত' গোপন রাখতে না পেরে বলেই ফেলেছিলেন, "পূর্ববঙ্গের এক স্বীয়প্রচারিত ভগবানও নিজের ভক্তদের নয়, নিজেই দাঙ্গার সময় মোল্লাদের হাত থেকে 'মৃত্যুকে অবলুপ্ত করতে না পেরে' দেওঘরে পালিয়ে এসেছিলেন।" 

✘ অনেক স্থান হইতে অনেক ভদ্রাভদ্র পুরুষ-রমণী যাঁহারা কখনও তাঁহাকে দর্শন করেন নাই বা তাঁহার নাম-ধাম অথবা তাঁহার বিষয় কিছুই পূর্ব্বে শ্রবণ করেন নাই তাঁহারাও স্বপ্নযোগে শ্রীশ্রীঠাকুরকে দর্শন এবং তাঁহার প্রচারিত সাধন- প্রণালীর দীক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াছেন এবং ইনিই তাঁহাদের একমাত্র আরাধ্য পরমপুরুষ বলিয়া জানিতে পারিয়াছেন। এইরূপ স্বপ্নদর্শনে অনেকে আকুল প্রাণে ছুটিয়া আসিয়া তাঁহার চরণে লুটিয়া পড়িতেছেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৭১) 

✔ কাহিনীর কোন বাস্তব ভিত্তি আছে? সাইদী যেভাবে টাকার বিনিময়ে তথাকথিত নিন্মবর্গের হিন্দুদের ও বৌদ্ধদের মুসলমান বানাত সেই কাহিনীর মত হয়ে গেল না? আর তিনি কেন গুটি কয়েক মানুষকে স্বপ্নে দীক্ষা দিলেন? সবাইকে কেন এভাবে দীক্ষা দিলেন না? নাকি সাইদীর মত টাকার বিনিময়ে মানুষ এইসব কাহিনী ছড়াত ? কাহিনীটা অনেকটা মোহাম্মদের শিষ্যদের সাথে মিলে যায় । 

✘অন্যান্য বালকদিগের দেখাদেখি ও কাহারও অনুরোধে(?) একদিন বালক পদ্মানদীতে ছিপে মৎস ধরিতে গিয়াছিলেন। তাঁহার ছিপে একটা বড় মাছ ধরিল। মাছ ধরা পড়িয়া কষ্ট পাইল বা মরিয়া যাইবে মনে করিয়া তিনি কাঁদিয়া আকুল হইলেন। মাছ ছাড়াইয়া বাঁচাইয়া দিবার জন্য উপস্থিত লোকদিগকে সকাতরে অনুরোধ করিতে লাগিলেন। তখন তাহারা মাছটি ছাড়াইয়া জলে ছাড়িয়া দিলে শান্ত হইলেন। আর কখনও সে-কার্য্য করেন নাই। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা৪২) 

✔অনুকূল ভক্তরা দাবি করেন, তাদের গুরু ভগবান এবং তিনি মানুষরূপে এসেছেন পাপীদের উদ্ধার করতে ! তার প্রতিটি বাণীতে নাকি জ্ঞান ঝরে পড়ে ! আচ্ছা এত জ্ঞানী গুণী মানুষ অথচ মাছ ধরার আগে কি মনে ছিল না যে ছিপ দিয়ে ধরলে মাছটি ব্যাথা পাবে? 

✘একদিন বলিলেন- “পূর্ব্বে মাছও খেয়েছি কিন্তু তাতে সাধনার ফল ভাল হয় নাই। তাই লোককে মাছ-মাংস খেতে নিষেধ করি। মাছ-মাংস খেলে ধ্যানের জ্যোতিঃ স্পষ্ট দেখা যায় না, ধোঁয়া দেখা যায়। স্মৃতিশক্তির বিঘ্ন হয়। স্ফূর্ত্তির হানি হয়। আমি দেখতাম-আমিষ খেলে আমার স্মৃতিশক্তি কম হ’ত। আমিষ খাওয়ার ফলে স্বপ্নে ও ধ্যানে দুষ্ট-বিষয় ঠিক- ঠিক মনে থাকে না। আমিষে রিপুর উত্তেজনা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। স্তত্ত্বিক- আহারে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়। সাত্ত্বিক- আহারে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়।’’ (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৭২) 

✔আমিষ খেলে যদি আয়ু কমে তবে, ভারতে ৪২% নিরামিষভোজী থাকা স্বত্তেও কেন আমিষভোজী আমেরিকানদের গড় আয়ু ভারতীয়দের চাইতে বেশী? প্রায় অর্ধেক নিরামিষভোজী ভারতীয়দের গড় আয়ু ৬৬.২১ বছর! আর মাংসাশী আমেরিকানদের গড় আয়ু ৭৮.৭৪ বছর ! 
http://matadornetwork.com/trips/5-best-countries-world-vegetarians/?single=1 

বাটীর ভৃত্য কোন দূরবর্ত্তী স্থান হইতে কতকগুলি নারিকেল মস্তকে বহন করিয়া আনিতেছিল। পথিমধ্যে তাহার বড় কষ্ট হেইতেছে দেখিয়া বালক নিজসম্তকে নারিকেলের বোঝা বহন করিতে লাগিলেন। কিছুদূর গমন করতঃ ক্লান্ত হইয়া বলিলেন- “আর তো পারি না”।এমন সময় তিনি দেখিলেন, শ্রী শ্রী কালীমাতা তাঁহার বোঝা মস্তক উচ্চ করিয়া বহন করতঃ লইয়া যাইতেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৪১) 

✔এই ঘটনার বাস্তব কোন ভিত্তি আছে? ঘটনাটি কে দেখেছে তা কিন্তু লেখক উল্লেখ করেন নি ! যদি ঠাকুরই হবে তবে বোঝা বহনে আবার কষ্ট কী ! আর এক ব্রাহ্মণ ভগবান কীভাবে অনার্য দেবী 'কালী'র সাহায্য নিল ?

✘ উক্ত শ্রীশবাবুর( শ্রীশচন্দ্র নন্দী) স্ত্রীর উদরাভ্যস্তরে আব(tumour) হইয়াছিল। ডাক্তারগণ বলিলেন- রোগ দুরারোগ্য। একদিন আকস্মিক ঘটনাবশতঃ তাঁহার ছোট কন্যার পদাঘাত লাগিয়া সেই টিউমার পেটের মধ্যেই ফাটিয়া গেল। তখন আরও ভয়ঙ্কর কাণ্ড হইয়া পড়িল। তাহাতে রোগীর পেরিটোনাইটিস্ নামক সাংঘাতিক ব্যাধি উপস্থিত হইল। তিনি মৃতপ্রায় হইয়া পড়িলেন। বড়-বড় ডাক্তার বলিলেন- “বাঁচিবার কোন আশা নাই।” সেই রাত্রেই মৃত্যু নিশ্চই স্থির হইল। শ্রীবাবুর স্ত্রীর জীবনলাভের উদ্দেশ্যে অনন্যোপায় হইয়া শ্রীশ্রীঠাকুরের নিকট প্রার্থনা-সহকারে সাধ্যানুসারে সত্যনাম করিতে লাগিলেন্ কি অদ্ভুত ব্যাপার! সেই রাত্রি হইতেই রোগী সুস্থ হইতে আরম্ভ করিয়া অত্যল্পকাল মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হইলেন। ল(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৮৯) 
✘ আরেকবার রাতুলপাড়ার শ্রীযুক্ত শ্রীকান্ত সরকার- মহাশয় ভয়ানক পীড়িতাবস্থায় সপরিবারে কুষ্টিয়াতে রহিয়াছেন। গুরুভ্রাতাগণ প্রাণেপণে যত্ন, শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বড়-বড় এম-বি, এল-এম-এস ডাক্তারগণ রোগীর জীবনের কোন আশা নাই বলিয়া জবাব দিয়াছেন। হোমিওপ্যাথিক মতে চিকিৎসা করিয়া আমিও কৃতকার্য্য হইতে পারিলাম না। রাত্রে মোক্তারবাবু বীরেন্দ্রনাথ রায় ও আমার কম্পাউণ্ডার শ্রীমান্ উপেন্দ্রনাথ দে রোগীর শুশ্রূষা ও প্রহরায় নিযুক্ত হইলেন। তাঁহারা খুব নাম নাম করিতেছেন ( এই সত্যনাম)। নিশীথকালে শ্রীকান্তের প্রাণপক্ষী দেহপিঞ্জর পরিত্যাগ করিল। এত রাত্রে প্রকাশ করা উচিত নয় বিবেচনায় তাঁহারা চুক করিয়া রহিলেন। পরে তাঁহারা পরামর্শ করিলেন যে, এই সত্যনামে অনেক মুমূর্ষু এবং মৃতব্যক্তি বাঁচিয়া গিয়াছে। ইহাকে নাম দ্বারা চেষ্ঠা করিয়া দেখিলে হয়। এই বলিয়া তাঁহারা প্রাণপণে নাম করিতে লাগিলেন এবং তাঁহার মুখে একটু চরণামৃত ঢালিয়া দিলেন। রজনী প্রভাত হইবার সঙ্গে-সঙ্গে শ্রীকান্ত আবার বাঁচিয়া উঠিলেন। আনন্দের আর সীমা নাই। সকলেরই যেন স্বপ্নবৎ বোধ হইতে লাগিল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৯১) 

✔ যদি সত্যনামে রোগ ভাল হয়ে যেত তবে অনুকূল ঠাকুর নিজে কেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতেন? আর নিজের ছোট ছেলেকে কেন ডাক্তারি পড়িয়েছিলেন? কেউ রোগাক্রান্ত হয়ে আসলে তিনি তাঁদের ওষুধের বদলে সত্যনাম দিলেই পারতেন! রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভারতের সরকারের হাসপাতাল ও ডাক্তারদের পিছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হত না ! আমেরিকা থেকে ওষুধ আমদানির বদলে সত্যনাম রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হত ! তাই নয় কি ? দিলীপ বাবু এই নীতি শিখলে নিন্দুকদের মুখ লুকানোর জায়গা থাকবে না ।

✘কখন-কখন তাঁহাকে ভোজন করাইবার জন্য সুন্দর আসন পাতিয়া দেওয়া হইলে এবং তাঁহার সম্মুখে নানাপ্রকার চর্ব্ব- চূষ্য-লেহ্য-পেয় সামগ্রী সুসজ্জিত করিয়া দেওয়া হইলে তিনি সেই সমস্ত জিনিস দেখিয়া বিষণ্ন হইয়া অশ্রুপাত করতঃবলিয়াছেন- ‘হায়!হায়! তোমরা আমাকে ঠাকুর করেছ, আমি ছিলাম একটি বামুনের ছেলে, পরে হলেম ডাক্তারবাবু, আবার এখন তোমরা আমাকে বল ঠাকুর, আর আমার জন্য এত বহুমূল্য সুন্দর খাদ্যদ্রব্য থরে-থরে সাজিয়ে ুদয়েছ। তোমাদের কত গরীব ভাই কত স্থানে একমুষ্টি চাউলের অভাবে কত কষ্ট পাচ্ছে তা’ তো তোমরা দেখছ না।” (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা – ১০৩)

✔ যার নামের গুণে মৃত মানুষ জীবিত হয়ে যায় তার ভক্তরা কেন না খেয়ে মরবে ? শুধু নামযপ করলেই ভারত 'হাঙ্গার ইন্ডেক্সে' শীর্ষস্থানে থাকতো !

✘ কলিকাতার ৭নং দীনবন্ধু লেন-এর শ্রীযুক্ত বাবু আশুতোষ ঘোষ, বি-এ, বি-এল, মহাশয় কুচবিহারের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট (নায়েব আহেলকার)। তিনি বিখ্যাত মহাপুরুষ স্বর্গত ঠাকুরদাস
বাবাজীর শিষ্য। নানকপন্থী। শ্রীশ্রীঠাকুরকে দর্শন করত এবং এই সত্যনাম সাধন-প্রণালী অবগত হইয়া বিশেষ সন্তোষলাভ করিয়াছেন। তিনি পুনরায় এই সত্যনামে দীক্ষিত হইবেন স্থির করিয়াছেন। কিন্তু মনে সময়ে-সময়ে একটু সন্দেহ আসিতেছে। গত ৬ই অগ্রহায়ণ রাত্রে তাঁহার নিদ্রা ভঙ্গ হইল।তখন তাঁহার অর্দ্ধনিদ্রা, অর্দ্ধজাগরণবৎ অবস্থা তিনি স্পষ্ট শ্রবণ করিলেন-তাঁহার স্বর্গীয় গুরুদেব
বলিতেছেন- “আমার মন্ত্র ফিরিয়ে দিলে আক্ষেপ নাই। যে-পথ অবলম্বন ক’রতে যাচ্ছ-তা বেশ। তাতেই মঙ্গল হবে।” এই ঘটনার পরেই তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের এই সত্যনামেই দীক্ষিত হইয়াছিলেন।(শ্রী শ্রী
ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা১৫৩)

✔ ঠাকুরের বাণীতে আছে নিজ গুরু ছাড়ার মত
ঘৃণ্য কাজ আর নাই ! যারা নিজ গুরু ছাড়ে তাদের ইহ ও পরজগৎ কোথাও ঠাঁই নাই! কোরানে বর্ণিত আছে, ইসলাম ত্যাগ করলে তার জন্য থাকবে দোজখের আগুন । নুকূ ভক্তরা কী বলছেন ?

অনুকূলের ভূত
""""""""""""

✘কুষ্টিয়ার এক গ্রামে এক বাড়ীতে ভূতের উপদ্রব হয়। ঘরে তালাচাবি বন্ধ করিয়া রাখিলে আপনা-আপনি সে তালাচাবি খুলিয়া যায়। নানারূপ চেষ্টা করিয়াও তাহার কোন প্রতিকার হইল না। রাম-নামে ভূত পলায়ন করে, এই ধারণায় সেই ঘরের দরজায় রাম-নাম লিখিয়া দেওয়া হইল। তাহাতে কোন ফল হইল না। পরে কৃষ্ণ-কালী-দুর্গানাম লিখিয়া দেওয়া হইল। কোন ফল হইল না। অবশেষে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রদত্ত সত্যনাম কাগজে লিখিয়া সেই দরজায় আঁটিয়া দিলে তাহার পরক্ষণ হইতেই সেই ভূতের উপদ্রব বন্ধ হইয়া গেল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ১৯২)

✔তার মানে অনুকূল ঠাকুরের দেওয়া নাম ছাড়া বাকি সব নামের কোন কার্যকারিতা নেই! তার মানে এতদিন ধরে যারা হরি, কৃষ্ণ,কালী নাম নিয়েছে তাদের কোন উপকার হয়নি? এব্যপারে অনুকূল ভক্ত ছাড়া বাদবাকি হিন্দুরা কি বলবেন? 

✘কলিকাতা মাণিকতলা শ্রীযুক্ত বাবু গৌরচন্দ্র নন্দী-মহাশয়ের আপার সার্কুলার রোডের বাটীতে প্রায় তিন বৎসর পূর্ব্বে একজন পৌঢ়া রমণীর ভূতাবেশ হয়। লোককে ভূতে ধরিলে যেরূপ ব্যবহার ও কথাবর্ত্তার গল্প শুনিতে পাওয়া যায় তিনি সেইরূপ করিতেন। নানারূপ চিকিৎসা ও ভূতুড়ে চিকিৎসা অবলম্বন সত্ত্বেও কোন ফল হইল না। ভুবনচন্দ্র নাথ নামক একটি পূর্ব্ববঙ্গবাসী বালক সেই বাড়ীতে থকিয়া কলেজে অধ্যয়ন করিত। সে একদিন শ্রীশ্রীঠাকুরের একখানা ফটো আনিয়া ঐ ভূতাবিষ্ট ব্যক্তিকে দেখাইলে তিনি বিকট চীৎকার করিতে-করিতে বলিতে লাগিলেন- “ও কার চেহারা, ওটা শীগগির সরিয়ে ফেল, ওটি আমি দেখতে পারব না, দেখলে আমার বড় ভয় হয়। আমি এখনি তোমাদের বাড়ী থেকে যাচ্ছি।” যে-ঘরের দরজায় ঐ ফটো রাখা হইত সে-ঘরে এ- রমণী যাইতে পারিতেন না। ১৪৮নং মানিকতলা রোডের ওরিয়েন্টাল মেডিকেল স্টোর নামক ডাক্তারখানার মালিক শ্রীযুক্ত বাবু নগেন্দ্রনাথ ঘোষাল মহাশয় সেই ফটোখানি দিয়াছিলেন। তিনি তাঁহার ফটো লইয়া যাইবার পর ঐ স্ত্রীলোকটির পুনরায় ভূতাবেশ হইল। তখন তাঁহার একখানা ফটো কিনিয়া ঘরে রাখিয়া দিলে ভূত ছাড়িয়া গেল, আর আসিল না।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ১৯২) 

✔এখন থেকে সব দেবতা বাদ! অনুকূল ঠাকুর জিন্দাবাদ ! 

✘হিমাইতপুর গ্রামে এক সময়ে খুব কলেরা হইতেছিল। শ্রীশ্রীঠাকুর রত্রিকালে রাস্তায় গমন করিতে-করিতে দেখিলেন যেন একটি স্ত্রীমূর্ত্তি তাঁহার সম্মুখ দিয়া যাইতেছে। তিনি তাহার দিকে মনোযোগ দিবামাত্র তাঁহার ললাট হইতে একটি উজ্জল আলো ছুটিয়া ঐ স্ত্রী- মূর্ত্তির দিকে গেল। মূর্ত্তি খুব বেগে দৌড়াইতে লাগিল। আলোটিও তাহার পশ্চাদ্ধান করিতে থাকিল। পরে সেই স্ত্রীমূর্ত্তি আকাশে উঠিয়া শূন্যমার্গে চলিতে লাগিল, আলোটিও তাহার পশ্চাদনুসরণ করিতে লাগিল। শেষে ৫/৬ মাইল দূরে ঠিক যেন দোগাছি গ্রামে স্ত্রীমূর্ত্তিটি অবতীর্ণ হইল।আলোটি ফিরিয়া আসিল। পরদিনই হিমাইতপুরের কলেরা বন্ধ হইল এবং দোগাছিতে কলেরা আরম্ভ হইল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা১৯৩)

✔অনুকূল ঠাকুরের একটি বাণী আছে, 

বুদ্ধ ঈশায় বিভেদ করিস
শ্রীচৈতন্যে রসুল কৃষ্ঞে জীবোদ্ধারে হন আবির্ভাব
একই ওঁরা তাও জানিস নে?

তা অনুকূল ঠাকুর কলেরা থেকে নিজের গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করলেন কিন্তু পাশের গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করলেন না কেন? যে ব্যাক্তি একদল লোককে বাঁচাতে গিয়ে অন্যদল লোককে মেরে ফেলে তার সততা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় ! নাকি বাকিদের উদ্ধার করতে নতুন কেউ(বন্দে বন্দে পুরুষোত্তম) আবির্ভাব হবেন নতুন কোন সত্যনাম নিয়ে ! 

No comments:

Post a Comment

বিজেপির ভোটের রাজনীতি আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবনা - শিমুল টিকাদার

লিখেছেন : শিমুল টিকাদার আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । আমাদের সম্প্রদায়ের বড়ো একটি অংশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষ...