Sunday 12 February 2017

সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত কি ভারতের এজেন্ট ছিলেন ?

সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত
জন্ম : ৫ মে ১৯৪৫ সাল । তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) সিলেট জেলার দেরাই উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতা শ্রী দেবেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত , মাতা শ্রীমতী সুমতি বালা সেনগুপ্ত । এবং তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত , পুত্র শ্রী সৌমেন সেনগুপ্ত ।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত ৫ ই ফেব্রুয়ারী ২০১৭ সালে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ভোর – ৪:২৪ মিনিটে ) । আমরা এই মানুষটির মৃত্যুতে গভীর শোক জ্ঞাপন করছি ।
সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ; আবার সেন্ট্রাল ল কলেজ হতে তিনি এল এল বি পাঠ সম্পন্ন  করেন ।
জানা যায় , তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় বামফ্রন্ট এর হাত ধরে ; অবশ্য পরে তিনি আওয়ামীলীগ এ যোগদান করেন । তিনি বর্তমানে(মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত) সুনামগঞ্জ-২ আসনের এম পি, আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এবং বাংলাদেশের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন । এছাড়াও তিনি ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেলমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন ; কিন্তু পরে এক পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ২০১২ সালে  তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় ।
সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত সর্বপ্রথম আওয়ামীলীগের হয়ে পাক-পার্লামেন্ট নির্বাচনে ১৯৭০ সালে সিলেট জেলা থেকে জয়ী হয়েছিলেন । এরপর ১৯৭১ সালের  বাংলাদেশের সেই ভয়াবহ স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সাব-কমান্ডার হিসেবে সেক্টর-৫ এ দ্বায়িত্ব পালন করেছেন । এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সংসদের পুনঃগঠন কমিটিতে এবং সংবিধান রচনায় তিনি ছিলেন সক্রিয় একজন ব্যক্তি । অর্থাৎ সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত বাংলাদেশের জন্মলগ্ন সময়ের ব্যাক্তি ; যিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম কারিগরদের মধ্যে একজন ।
তাহলে এখন যদি তাকে একমাত্র ধর্মীয় কারণে ( তিনি হিন্দু ) বাংলাদেশের শত্রু এবং ভারতের এজেন্ট বলা হয় , তাহলে সে কথার গ্রহনযোগ্যতা কতখানি ?
সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত একজন সফল রাজনীতিবিদ । তিনি কারও কাছে খ্যাতিমান কারও কাছে সমালোচিত ; কারও কাছে তিনি সমাদৃত আবার হয়ত কারো কাছে তিনি রাজনৈতিক শত্রু । তবে তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে তুখোড় রাজনীতিবিদ এবং সুপরিচিত ছিলেন তাতে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য এই যে, তিনি জাতিতে হিন্দু হওয়ার কারনে মৃত্যুর পরেও তাকে আজ মালাউন ,কাফের,ভারতের এজেন্ট ইত্যাদি ইত্যাদি গালাগাল শুনতে হচ্ছে । একশ্রেনীর মানুষের ( মৌলবাদী /জামাত ইসলামী ) এই বিভীষিকাময় আচরন আজ বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের কাছে লজ্জা ; কেননা তাদেরকে আজ এই মিথ্যাচার/অপপ্রচার/হিংসা নীরবে হজম করতে  হচ্ছে ।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামীলীগ , বিএনপি যে দলেরই হোক কেউ যদি বলে পাকিস্তানিরা ৭১ এ আমাদের মা বোনদের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে , আমাদের ধন-সম্পত্তি লুটে খেয়েছে তাহলে নিঃসন্দেহে সেই ব্যক্তি মৌলবাদীদের কাছে হয়ে যায় ভারতের এজেন্ট ; এবং এইসব ঘটনার মূল চালিকাশক্তি/মদতদাতা সবসময়ই জামাত । যাদের এই বৈরিতাপূর্ন আচরনের ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ তার ধর্মনিরপেক্ষতা ভুলে গিয়ে ধীরে ধীরে ইসলামিক স্টেট মুভমেন্টে পরিনত হচ্ছে ।
সমালোচনার উর্ধ্বে কেউ নয় । যেকোনো পাবলিক ফিগার সমালোচিত হবেন আবার মানুষ তাকে ভালবাসবেন এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু এভাবে ? সেদিন হিন্দু রীতি অনুসারে সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্তকে চন্দন কাঠে দাহ করা হয়েছিল । এবং সেই দাহ করার ভিডিও ফুটেজ সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে পোস্ট করে একদল মৌলবাদীদের (জামাত) মন্তব্য ছিল এরকম –
মালুটা দোযখের আগুনে জ্বলছে
নরকে চলে গেছে
ভারতের এজেন্ট ভারতে গেছে
দেশ থেকে একটা শয়তান কমেছে
ইত্যাদি ইত্যাদি এসব তথ্য তারা ফেসবুকে ভাইরাল করেছিল সেদিন ; অবশ্য সেদিন এই অপকর্মের জন্য দুই দুষ্কৃতী গ্রেফতারও হয়েছে ।
ভাবতে অবাক লাগে এই মানুষগুলোই আবার বর্বর গোলাম আযম , নিজামী , কাদের মোল্লাদের মৃত্যুর পর দোয়া পাঠ করেছিল ; যারা কিনা ৭১ এ দালালি করে বাংলাদেশের কিশোরী- যুবতীদের গনিমতের মাল হিসেবে পাক সেনাদের হাতে তুলে দিয়েছিল । যার ফলে জন্ম হয়েছিল হাজার হাজার অবৈধ সন্তান ; যাদের কোন পিতৃ পরিচয় নেই , নেই কোন সামাজিক মর্যাদা । সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি কিনা এই অসহায় ধর্ষিতা নারী এবং তাদের সন্তানদের সমাজে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য তাদের পক্ষে কথা বলতেন , তাদের জন্য লড়াই করতেন । এই আলোচনা থেকে সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্তের দেশভক্তি এবং মানবসেবা এর নজিরবিহীন উদাহরণ লক্ষ্য করা যায় । অথচ তার মৃত্যুর পর তাকে আজ ভারতের এজেন্ট উপাধি দিয়ে দেশদ্রোহী প্রমাণ করতে মত্ত হয়েছে এই মৌলবাদী জামাতের কর্ণধার এবং তাদের অনুসারীরা যারা এখন হেফাজতে ইসলাম নামে নতুন আত্মপরিচয়ে বাংলাদেশে একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল  ।
এই অসাধু ,গণ্ডমূর্খদের জন্য বাংলাদেশ আজ লজ্জিত !!!

লিখেছেন : শিমুল টিকাদার 

Thursday 2 February 2017

কেমন আছো তুমি ?

শিমুল টিকাদার

কেমন আছো তুমি  ?
জানি ভালো আছো হয়ত নেই ।

সময়ের গল্পগুলো আজ জ্যান্ত হল
বছর ঘুরে পুনরায় শরৎ এলো
কাশ বন আর শিউলি'রা
নতুন আলোর সন্ধান নিয়ে এলো
কিন্তু সেই আলোয় চোখ মেললে না তুমি
একটি বারের জন্যেও
বললে না জমে থাকা কথাগুলি
শুধু কল্পনাতেই নীরব হয়ে রইলে ।

তাই আমি আজ জানতে চাই
তোমারই মতো নীরব মনে
কেমন আছো তুমি  ?
জানি ভালো আছো হয়তো নেই ।

লোডশেডিং



শিমুল টিকাদার

আজ আমি লোডশেডিং চাই
চাই না ঘরে আঁলো
ঐ আলোতে যদি না পাই
তোমায় দেখতে ভালো ।

সেই আলোতে হয় না সকাল
দূর হয় না মনের কালো
তাই কেমন করে দেখবো তোমায়
বিনিময়ে তুমি বাসবে আমায় ভালো ।

তোমার হাতে জ্বলছে প্রদীপ
মুখে ঝরছে চাঁদের আঁলো
ঐ আঁলোতে ভাসবো আমি
ভাগ্যিস !! লোডশেডিং'টা এলো ।।

বিজেপির ভোটের রাজনীতি আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবনা - শিমুল টিকাদার

লিখেছেন : শিমুল টিকাদার আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । আমাদের সম্প্রদায়ের বড়ো একটি অংশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষ...