Wednesday 8 August 2018

বিজেপির ভোটের রাজনীতি আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবনা - শিমুল টিকাদার



লিখেছেন : শিমুল টিকাদার

আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । আমাদের সম্প্রদায়ের বড়ো একটি অংশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাদের স্পর্শ করতে পারেনি এটা ঠিক । কিন্তু আমরা সবাই যে অশিক্ষিত বা অবুঝ তা কিন্তু নয় । হ্যা,  ঠিক এখানেই রাজনৈতিক দলগুলোর বড় সমস্যা । কোনটা গালগল্প, কোনটা টোপ আর কোনটা ভাওতাবাজি এটুকু বোঝার ক্ষমতা আমাদের অবশ্যই আছে ।

বিজেপি ২০০৩ সালে নাগরিকত্বের কালা আইন পাশ করেছে, সে কথা আমরা এখনও ভুলে যাইনি । ভুলব কি করে?  তীরবিদ্ধ হয়ে আছে যে । তখন অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এই বিলের কোনো বিরোধীতা করে নি।

একদিকে আমাদের অস্তিত্বের বুকে তীরবিদ্ধ হয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে , অন্যদিকে ধনুকের পেছনের লোকটি বলছে এই রক্তক্ষরণ আমরা বন্ধ করব আগে আমাদের ভোট দাও । কত আশা আর কি সহজ প্রতিশ্রুতি , কত শত মামা বাড়ির আবদার । ওদের ধারণা আমাদের স্মৃতি থেকে ২০০৩ সাল মুছে গেছে ।

ওরা আমাদের উদ্বাস্তু বাঙালির "প্রাণ " সুবোদ বিশ্বাস'কে কারাবন্দি করে রেখেছে । ১ বছর হয়ে গেছে আমাদের লোকগুলো ওদের কাছেই বারবার ছুটে গেছে একটু সাহায্যের জন্য । কিন্তু ওরা কোনো সবুজ সংকেত দেয় নি। দিনের পর দিন ওরা কোর্টে মিথ্যে মামলায় বন্দি "সুবোদ বিশ্বাস" এর জামিন এর বিরোধিতা করেছে । অথচ এই সুবোদ বিশ্বাস উদ্বাস্তুদের স্বার্থ রক্ষার আশায় বুক বেঁধে আসামে ওদের ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেছে। তবুও আপনাদের "বিশ্বাসঘাতক" নাই বা বললাম, আপনারা সারাজীবন "ভগবান রামচন্দ্র" হয়েই বেঁচে থাকুন ।

২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর আপনারা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু এই বিলের ভেতরে যে খেলা খেলার চেষ্টা করেছিলেন বাহিরে তা প্রকাশ করেননি । গণমাধ্যমে বলেছেন অন্য কথা। ঐ বিলে অনেক অসংগতি আমাদের নজরে এসেছে। যাই হোক, তারপরেও ঐ বিলের প্রতি আমরা ততটা আগ্রহ আপনাদের মধ্যে দেখিনি। বিরোধী দলগুলি নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করছে এই অজুহাত দেখিয়ে আপনারা আমাদের কাছে যখন  ভোট প্রার্থনা করেন তখন সমুদ্রের বুকে শিশিরের কণা পড়লে সমুদ্রের যে অনুভূতি হয় আমাদের তাও হয় না । এটাই সত্যি .....!

আপনারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করেন । আমরা আপনাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । তাই আমরা চাইলেই আমাদের ভাগ্য বদলাতে পারি না । আপনাদের এতসব অত্যাচার সহ্য করেও আপনাদের মতো লোকেদের মুখের দিকে তাকিয়ে আশায় বুক বেঁধে রাখি।


আমরা খুব অসহায়...!

Sunday 18 March 2018

বিস্ময়


শিমুল টিকাদার

জিপ গাড়িটা থেমে গেল আমাদের অনুরোধেই।এখান থেকে দার্জিলিঙ মাত্র দেড় হাজার ফুট উপরে। গাড়ির ভেতর থেকেই আমরা চারপাশে তাকাতে লাগলাম । গাড়ির ইঞ্জিন তখনও শো শো শব্দ করছে। আমাদের ড্রাইভার গোর্খা ভাষায় কি যেন একটা বলে যাচ্ছে । আমরা ওর কথা বুঝতে পেরেছি এই ভান করে কৌতুহল নিয়ে মাথা নাড়তে থাকলাম । তারপর স্টিয়ারিং এ ধাক্কা দিতেই উত্তেজনা নিয়ে বলে উঠলাম "রুখ যাও"। সঙ্গে সঙ্গে  গাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাক্ষেত্রে। যে দিকে দু'চোখ যায় শুধু উঁচু উঁচু পাহাড় আর পাহাড় । সকালের সূর্যের আলোয় পাহাড়ের গায়ে সবুজ কিংবা বেগুনি রশ্মি পড়েছে । ওদিকে শেষ পাহাড়ের মাথার উপর দৃশ্যমান হয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা'র চূড়া। মাথার উপরে স্বচ্ছ নীল আকাশ । বিশুদ্ধ অক্সিজেন। রাস্তার পাড় থেকে শুরু করে নিচের দিকে শেষ সীমানা পর্যন্ত সাজানো সারি সারি চা বাগান । আমি এবং আমার বন্ধু অমিত আর ড্যানি ততক্ষণে হারিয়ে গেছি অন্য এক ভূবনে । চারিদিকে নীরব । মৃদু ঠান্ডা হাওয়া বইছে...

Saturday 3 February 2018

রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্ম চর্চা কেনো গুরুত্বহীন!


শিমুল টিকাদার

নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীন ভাবে চর্চা বা পালন করা মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সেই অধিকার যখন তার গন্ডি পেরিয়ে ন্যায় ও সাম্যের মানদন্ডের মাথায় চেপে বসে তখন তাকে বলা হয় অনুপ্রবেশকারী। ভারতীয় রাজনীতিতে "ধর্ম" কে এভাবে আমরা একটি অনুপ্রবেশকারী সত্ত্বা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি ।

বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত এই ধর্ম চর্চা হল একটি ব্যাক্তি-কেন্দ্রিক অধিকার যার লাভ-লোকসান এর দ্বায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করে না । এমনকি রাষ্ট্র এই ধর্ম প্রচারের কোনো দ্বায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে পারে না । কারন, এর ফলে রাষ্ট্রে ধর্মীয় ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। আদর্শ হিসেবে গনতন্ত্র হল এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা, যেখানে সব মানুষ সমান না হলেও এক অর্থে সমমর্যাদার অধিকারী। এরূপ সমাজে প্রত্যেকেই সমাজের অবিচ্ছেদ্য এবং একান্ত প্রয়োজনীয় অংশ।

দেশের সংবিধান এবং ধর্মগ্রন্থ  (যেকোনো) পারস্পরিক সাংঘর্ষিক। কেননা কোনো একটি ধর্মগ্রন্থের জীবন-দর্শন একটি নির্দিষ্ট সময়কে আবর্তন করে গড়ে ওঠে যা সময়ের বিবর্তনের ফলে অনেকটাই মানুষের চাহিদার বিরুদ্ধাচারন করে। অপরদিকে "সংবিধান" মানুষের উপর গভীর পর্যবেক্ষণ এর ভিত্তিতে গড়ে ওঠে । তাছাড়া সংবিধান মানুষের চাহিদার ভিত্তিতে পরিবর্তনশীল - যার ফলে মানুষের জীবন আরও সহজ ও সচ্ছলতায় ভরে ওঠে। মানুষ হয়ে ওঠে স্বাধীন ।

"গনতন্ত্র" একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রক্রিয়া । "রাজনীতি" গণতন্ত্রের একটি অংশ মাত্র । গণতন্ত্র চর্চা বলতে রাজনীতি, অর্থনীতি,সমাজনীতি ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা, সমালোচনা, গবেষণা এবং এর যথাযথ প্রয়োগ কে বোঝায়। একটি রাষ্ট্রের সুসংহত গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের আচরন নিয়ন্ত্রণ করে তাকে একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম ।

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ভারতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্ম চর্চা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তাতে গণতন্ত্রের মান খুন্ন হয়েছে বা হচ্ছে বলে আমি মনে করি । বিগত দিনে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে একটু দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে, রাজনৈতিক দলগুলোর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির চেয়ে ধর্মীয় ও জাতিগত চাহিদা ও তত্ত্ব ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়। আমরা আরও একটু বিস্তারিত আলোচনা করলে বুঝতে পারি, এই মুহূর্তে দেশে যত বেশী দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতিত হবেন তার থেকে রাজনৈতিক সুবিধা পাবেন বা পাওয়ার চেষ্টা করবেন কংগ্রেস নেতৃত্ব ঠিক তেমনি ভারতবর্ষে এই মূহুর্তে হিন্দু ধর্মের মানুষ নির্যাতিত হলে তার থেকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করবেন বিজেপি নেতৃত্ব । সুতরাং কংগ্রেস এবং বিজেপি সুপ্রিমো তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে আলোচ্য ঘটনা ঘটলে এক পর্যায়ে উল্লসিত হন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । কেন্দ্রের শাসকদল নেতৃত্বের বয়স খুবই খুব বিধায় কংগ্রেস উন্নয়ন থেকে সাম্প্রদায়িক তত্ত্ব দিয়েই তাদের মোকাবিলা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তেমনি বিজেপিও ধর্মীয় বিভাজনের প্রক্রিয়া অবলম্বন করেই অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে চান।

এই মুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে আলোচ্য বিষয়ের ভিত্তিতেই যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের ব্যার্থতা ঢাকার অন্যতম যন্ত্র হতে যাচ্ছে ধর্মীয় এজেন্ডা । সম্প্রতি বিজেপির রাম নবমী,  তৃণমূলের পুরোহিত সম্মেলন কিংবা সিপিএমের মিটিং এ শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন রাজনৈতিক অঙ্গনের মূল ধারা এবং এর গতিপথ কে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করবে বলে আমি মনে করি।

আজকে বিজেপির বিরুদ্ধে যে তীব্র সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ উঠেছে একটু গভীরে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে বিজেপির এই প্লাটফর্ম প্রায় ৭০ ভাগ তৈরী করে দিয়েছে পূর্বের শাসকদল। বিজেপি শুধু যায়গা বুঝে মসলা মাখানোর দ্বায়িত্ব টুকু নিয়েছে। একই ঘটনায় হেমন্ত-দীপঙ্কর-নিতাই এর থেকে আফযারুলের এর প্রতি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আজ বিজেপির হিন্দুত্ববাদ রাজনীতির প্লাটফর্মে পরিণত হযেছে। উভয়ের লক্ষ একটাই - ভোটব্যাংক । বর্তমান কেন্দ্রের বিজেপি থেকে পূর্বের শাসকদল কংগ্রেস কি খুব ভালো ছিল? তাও নয়!! আগে সবাই ফেজ টুপি পড়ত এখন সবাই কপালে তিলক চন্দন মাখছে। শুধুমাত্র দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়েছে; গতানুগতিক ধারার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

পরিশেষে --
ভারতবর্ষের রাজনীতিকে রাজনৈতিক মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার দ্বায়িত্ব সাধারণ জনগণকেই নিতে হবে। এর জন্য খুব বেশী শ্রম দিতে হবে তাও নয় । শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর প্ররোচনায় পা না বাড়িয়ে নিজেকে রাষ্ট্রের গঠনমূলক মূলক কাজ বা আলোচনায় নিয়োজিত করে সামনের দিকে বেগবান হওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ  - মূলত এটাই একজন আদর্শ সুনাগরিকের বৈশিষ্ট্য । এরফলে রাজনীতির পৃষ্ঠা থেকে মুছে যেতে পারে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু, দলিত সহ বিভিন্ন যন্ত্রনাদ্বায়ী শব্দগুলো। রাজনীতির অঙ্গনে ফিরে আসতে পারে স্বচ্ছতা ।

ধর্ম নয়! রাজনৈতিক প্রতিযোগীতা হবে উন্নয়ন ভিত্তিক। যা মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে।এবং রাজনৈতিক চর্চায় উঠে আসবে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি,সমাজনীতি ইত্যাদি । ---- আসুন আমরা দ্বায়িত্ব নেই, স্বপ্ন দেখি!!

Monday 13 November 2017

শুধুই অন্ধকার


শিমুল টিকাদার

নিভে গেছে আলো
অন্ধকারে বিলীন হয়েছে জীবনের
শ্রেষ্ঠত্ব।

জীবনের সজীবতা, স্নিগ্ধতা
হয়েছে মরুভূমি।

ঠোঁট, চিবুক,গলা কেপে উঠতেই
দৃশ্যমান হৃদয়ের গভীর ক্ষত
যার চারপাশে শুধুই
অন্ধকার!!

Saturday 28 October 2017

ব্যার্থ কবি


শিমুল টিকাদার

আতঙ্কের ভঙ্গিতে মাটিতে গড়িয়ে পড়া
ছেলেটিকে কবির তুলে ধরার চেষ্টা
চোখে চোখ পড়তেই গভীর উপলব্ধি
থমকে গেছে সময় ।

মলিন মুখ, অসহায় চাহনি, চোখের জল
কবির মনকে আহত করেছে
দু-হাতের আঙুল স্পর্শ করে
কান্নার কারন জানতে চাইলে -
আমাকে মারবেন না স্যার, আমাকে মারবেন না
বাতাসে কান্না-কাকুতি-মিনতির দীর্ঘশ্বাস ।

ওকে সেচ্ছাসেবীরা মেরে পূজা মণ্ডপ
থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে
ওর ময়লা জামা, সর্বশরীরে লেগে থাকা ধুলো
সবার অসস্তির কারণ
ওদের পরনের নতুন কাপড় ছেলেটিকে ছোঁয়নি
লাল-নীল-খয়েরী আলো ওকে স্পর্শ করেনি
এমনকি স্বয়ং দেবী দুর্গাও ওকে দেখে
আজ তুষ্ট হতে পারেননি ।

মাটির বুকে মাথা রেখে ঐ কান্নার
পেছনে এত নিষ্ঠুরতা জেনে
কবি-মন কেঁদে ওঠে
হৃদয়ের গহীনতম প্রদেশ আন্দোলিত হয়
বেজে ওঠে বিষাদের সুর
আর্তনাদে কম্পিত হয় প্রতিটি শিরা ও উপশিরা
ইচ্ছে হয় মাটিতে লুটায়ে
ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে
পরাজয়ের কান্না কাঁদতে ।

কবি অসহায় কবি রক্তাক্ত
বিনয়ী কবি আজ ক্ষুব্ধ
কিন্তু নিরুপায় ।

বাড়ি ফিরে চিরচেনা সেই লগ্ন
ঘরে শুয়ে থাকা অগণিত বইয়েরা দেয় ধ্বনি
দেয়ালের ছবির কন্ঠে বাজে শঙ্খ
কবির রক্তাক্ত হৃদয়ের গর্জনে
আজ কবিতা হবে অশ্রুসিক্ত।

কবি ভাবনার আড়ালে নিরুদ্দেশ
কবিতা আর লেখা হলো না
অসহায় ছেলেটির আর্তনাদের ভর
সাদা কাগজ বোধয় সইতে পারবে না
নীল রঙের কলমটিও আজ বড়ো অসহায়
ওর ভাবনার আড়ালে কবিতার গল্পরা
এত নির্দয় ছিল না ।

কবির চশমার কাঁচের দেয়ালের ওপারে
ঝাপসা আলো, অচেনা পৃথিবী
কল্পানায় তাড়া করে ছেলেটির মলিন মুখ
বেজে ওঠে সেই কন্ঠ -
আমাকে মারবেন না স্যার, আমাকে মারবেন না ।

কবি নীরব
কবি বাকরুদ্ধ
কবির কল্পনাতেই থমকে
কবিতার নিথর দেহ
কবি আজ ব্যার্থ ।

Thursday 26 October 2017

আশ্চর্য এক সন্ধায়..

চন্দ্রিমা উদ্যানের সন্ধ্যা 

শিমুল টিকাদার

শ্রাবণের সন্ধ্যা ছিল সেদিন। চারিদিকে জোৎস্নার আভা। চন্দ্রিমা উদ্যান। জোৎস্নার আলোয় গা ভেসে যাচ্ছিল আমাদের । আমরা বেশ তৃপ্তি নিয়ে তা উপভোগ করেছিলাম । জলের দিকে পা হেলিয়ে গাঢ় খয়েরী রংয়ের ইটের দেয়ালের উপর ১.৫ ইঞ্চি দূরত্বে বসেছিলাম আমরা। মাথার ওপর গাছের পাতারা দুলছিল তখন। সেদিন সকালে খুব বৃষ্টি হয়েছিল । তাই বাতাস ছিল ঠান্ডা ; যা আমাদের মনকে শান্ত রেখেছিল । সেই আশ্চর্য এক সন্ধায় আমরা ছিলাম সম্পূর্ণ নীরব। মুখে কোন কথা না ঝরলেও পরস্পরের আত্মা ঠিকই গল্প/কথা জুড়ে দিয়েছিল (নন ভার্বাল কমিউনিকেশন) । আমরা প্রায়শই এভাবে একে অপরকে উপভোগ করতাম । লেকের ওপারে ল্যাম্প-পোস্টের সারি কিছুটা বিরক্তির কারন ছিল। সেই মুহূর্তে তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে থমকে যাচ্ছিলাম আমি । জোৎস্নার আলো জলে প্রতিফলিত হয়ে তোমার মুখটিকে গ্রাস করেছে। চন্দ্রমুখী!! গাছের পাতার ঝাপটায় বারবার অন্ধকার হয়ে এসেছিল সেই মুখ । আমি মন ভরে সেই দৃশ্য দেখেছিলাম । তুমি লাল-খয়েরীর উপর কালো ছাপা রঙের সালোয়ার পড়ে এসেছিলে সেদিন। তোমার এই ড্রেসটা আমার খুব প্রিয় ছিল, তুমি জানতে। তোমার মাথা ভরা কোঁকড়ানো চুল আমাকে আকৃষ্ট করত । চুলের কাচা গন্ধে আমি আন্দোলিত হতাম। সেদিনও হয়েছিলাম । শেষ মুহূর্তে আমার হাত স্পর্শ করে তুমি আমার নাম ধরে ডেকেছিলে, যখন আমি মৃদু বাতাসে লেকের জলের ছোট ছোট ঢেউ এবং জোৎস্নার আলোর গভীর মিতালী উপভোগে মগ্ন ছিলাম ।

Monday 18 September 2017

স্মৃতি ফেরে চোখে


শিমুল টিকাদার

জীবন থমকে যায়
কত চেনা-অচেনা মানুষের ভিড়ে
নিজেকে মনে হয় বড় অপরাধী
রঙিন স্বপ্নে মন টানে না
পড়ে রই সাদা-কালো স্তব্ধ অ্যালবামে।

একটা সময় -
জীবন চলে জীবনের প্রয়োজনে
ঠিক চলে না, চালিয়ে নিতে হয়
অভ্যাসগুলো পালিয়ে বাঁচে
স্মৃতি ফেরে চোখে ।

সত্য বলতে বলব এটুকুই
আমরা জীবন যেভাবে দেখি
জীবন আমাদের সেভাবে দেখে না ।

বিজেপির ভোটের রাজনীতি আর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবনা - শিমুল টিকাদার

লিখেছেন : শিমুল টিকাদার আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । আমাদের সম্প্রদায়ের বড়ো একটি অংশ অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষ...